কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করলে কী না হয়; যার বড় উদাহরণ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। শুধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ‘মোবাইল উৎপাদনকারী’ হিসেবে সব শর্ত পূরণ না করেও ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা নিয়েছে চীনের মালিকানাধীন কোম্পানি আই স্মার্ট ইউ টেকনোলজি বিডি (স্মার্টু)। প্রতিষ্ঠানটি টেকনো, আইটেল, ইনফিনিক্স অ্যান্ড্রয়েড, স্মার্ট ও ফিচার ফোন সেট উৎপাদন এবং বাজারজাত করে থাকে। প্রথমে সরেজমিন তিন দফায় কারখানা পরিদর্শন করে শর্ত পূরণ না হওয়ায় ভ্যাট অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে এনবিআরের সংশ্লিষ্ট শাখা। কিন্তু চতুর্থ দফায় এনবিআর অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা আদায় করে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। আর কর্মকর্তাদের অসাধু চক্রকে ম্যানেজ করার প্রমাণ মিলেছে ভ্যাট অব্যাহতি পাওয়ার প্রায় তিন মাস পর কারখানাটি সরেজমিন পরিদর্শন প্রতিবেদনে। ভ্যাট অব্যাহতির অন্যতম শর্ত হচ্ছে ‘স্থানীয়ভাবে ৫০ শতাংশ মোবাইল ফোনের ব্যাটারি ও চার্জার উৎপাদন করতে হবে।’ কোম্পানিটি শর্তভঙ্গ করে ব্যাটারি ও চার্জার উৎপাদন না করে আমদানি করা পণ্য বাজারজাত করে আসছে। এ ছাড়া প্রতি মাসে দেওয়া ১৮ থেকে ১৯ কোটি টাকার ভ্যাট; অব্যাহতির পরে নেমে এসেছে মাত্র ৪ কোটি টাকায়। ভয়াবহ জালিয়াতি ও অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ার পরও অব্যাহতি সুবিধা বাতিলের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতেও গড়িমসি করছে ঢাকার পূর্ব ভ্যাট কমিশনারেট। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, মোবাইল ফোন সেট ও সরঞ্জাম উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। স্মার্টু ভ্যাট অব্যাহতি পেতে সাড়ে ৭ শতাংশের পরিবর্তে ৫ শতাংশ করার আবেদন করে। কিন্তু তাদের প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ না করায় এনবিআর সেটি নাকচ করে দেয়। পরবর্তী সময়ে তারা চতুর্থ দফায় একাধিক কর্মকর্তাকে ‘ম্যানেজ’ করে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাস থেকে সেই সুবিধা আদায় করে নেয়। এতে গত ৬ মাসেই সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে প্রায় একশ কোটি টাকা। এই অবস্থায় এনবিআরের কর্মকর্তাদের একটি অংশ ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা বাতিলের প্রস্তাব করেছে। কিন্তু প্রভাবশালী একাধিক কর্মকর্তার চাপে ভ্যাট কার্যকর হচ্ছে না।বিস্তারিত