১৯৫৬ সালে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশের প্রথম ছবি ‘মুখ ও মুখোশ’-এর পোস্টার তৈরি করেন চলচ্চিত্রনির্মাতা ও অভিনেতা সুভাষ দত্ত। এ পোস্টার মূলত মোস্তফা আজিজের স্কেচ ও ডিজাইন করা। সুভাষ দত্ত ছিলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রে পোস্টার শিল্পের সূচনাকারীদের একজন। প্রথমদিককার প্রায় সব চলচ্চিত্রের পোস্টারেই সুভাষ দত্তের হাতের ছোঁয়া থাকত। সুভাষ দত্ত প্রথম জীবনে দিনাজপুরের লিলি টকিজে কাজ করতেন। সেখানে প্রদর্শিত কলকাতা-মুম্বাইয়ের বিভিন্ন চলচ্চিত্রের পোস্টার ও শো-কার্ড তৈরি করতেন তিনি। এ বিষয়ে আরও ভালো জানার জন্য ১৯৫১ সালে মুম্বাই চলে যান। পামার্ট নামে ফিল্ম পাবলিসিটি ফার্মে কাজ নেন। ওই ফার্মে মারাঠিরা কাজ করত। তারা জলরঙ, ¯েপ্র, পেইন্টিং, পেনসিল-চারকোল দিয়ে পোস্টার আঁকতেন। ব্যানার, শো-কার্ড, বুকলেট, পেপার পাবলিসিটির কাজ দেখে দেখে সব শিখে নেন সুভাষ দত্ত। ১৯৫৩ সালে ঢাকায় চলে আসেন তিনি। চাকরি নেন এভারগ্রিন পাবলিসিটিতে। তাঁর মাসিক বেতন ছিল ১১০ টাকা। ১৯৫৫ সালে আরও তিনজন অবাঙালির সঙ্গে মিলে কামার্ট নামে একটি পাবলিসিটি হাউস খোলেন সুভাষ দত্ত। বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশের প্রচারের দায়িত্ব পান তিনি। মুখ ও মুখোশ ছাড়াও জাগো হুয়া সভেরা, এ দেশ তোমার আমার, মাটির পাহাড়, আকাশ আর মাটি, রাজধানীর বুকে, রূপালী সৈকতে, নাজমাসহ তাঁর নিজের পরিচালিত সব সিনেমার পোস্টার তিনি আঁকেন। আধুনিক ভাস্কর্যশিল্পী নিতুন কুণ্ডুকে ভারত থেকে ঢাকায় নিয়ে আসেন সুভাষ দত্ত। এভারগ্রিন পাবলিসিটিতে তাঁর চাকরি জোগাড় করে দেন। এভাবেই সুভাষ দত্তের মাধ্যমে নিতুন কুণ্ডু চলচ্চিত্রের ব্যানার ও পোস্টার আঁকার মাধ্যমে ক্যারিয়ার শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে পোস্টার আঁকায় মুনশিয়ানা দেখে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন নিতুন কুণ্ডুকে আর্ট কলেজে ভর্তি করে নেন। মুখ ও মুখোশের পর থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ঢাকায় ২০৮টি চলচ্চিত্র মুক্তি পায়।বিস্তারিত