নার্গিস বেগম (ছদ্মনাম) সৌদি আরব থেকে দুই বছর আগে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফেরার আগে নার্গিস তার স্বামী বা নিজের বাড়ির লোকদের কোনো খবর না জানিয়েই চুপচাপ ফেরেন। এরপর ঢাকায় তার গ্রামের পরিচিত এক নারীর বাসায় ওঠেন। সৌদিতে কাজ করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার এই নারী তার মালিকের মাধ্যমে যৌন নির্যাতনের শিকার হন। পরে গর্ভধারণ করলে দেশে ফেরেন। এসেই গোপনে গর্ভপাত করান এবং তার স্বামীর কাছে ফিরে যান। নার্গিসের মতো আরও অনেক নারী শ্রমিক বিদেশে কাজ করতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণ করেন এবং লোকলজ্জার ভয়ে ও সংসার টিকিয়ে রাখতে গোপনে অবৈধ গর্ভপাত করান। হাতে গোনা কয়েকজন কিছু এনজিওর সহায়তা নিয়ে সন্তান প্রসব করে পরে পরিত্যাগপত্র দিয়ে সন্তানটিকে সেই প্রতিষ্ঠানের জিম্মায় রেখে যান।
দেশের প্রবাসী নারীদের নিয়ে কাজ করে এমন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব ঘটনায় পরিচিতদের কাছে লুকিয়ে রেখে এই নারী শ্রমিকরা নিজেদের ভ্রƒণ নষ্ট করে ফেলেন। দু-একজন ছাড়া স্বামী ও তার পরিবার নারী শ্রমিকটি গর্ভবতী হয়ে পড়েছেন এটি জানার পর আর সংসার করতে পারেন না। জানাজানি হলে এই নারীদের তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন গ্রহণ করে না। এক্ষেত্রে অনেকে আবার বিদেশে কাজের জন্য পাড়ি জমান। আর না হলে পথেঘাটে ঘুরে বেড়ান। আর যারা গর্ভপাতের সুযোগ পান না তারা সাহায্যকারী কোনো প্রতিষ্ঠানের সহায়তা নিয়ে সন্তান জন্ম দেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নারী শ্রমিকরা গর্ভধারণের বিষয়টি লুকিয়ে রাখেন এবং দেশে ফেরার পর লুকিয়ে গর্ভপাত করান। এক্ষেত্রে ভ্রƒণ হত্যার পাশাপাশি তারা অনিরাপদ গর্ভপাতের মাধ্যমে নিজের জীবনও ঝুঁকিতে ফেলেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, এই নারী শ্রমিকরা শিশুটির জন্ম দিয়ে তার মুখ পর্যন্ত দেখতে চান না। কিন্তু আমরা এই নবজাতক শিশুদের ভবিষ্যৎ ও সুস্থতার কথা ভেবে বিশেষ করে তাদের বুকের দুধ পান করানোর জন্য এ মায়েদের কিছুদিন শিশুটির সঙ্গে থাকার অনুরোধ করি। এর মধ্যে কিছু নারী শ্রমিক অনুরোধে সাড়া দেন, অনেকেই দেন না। বিস্তারিত