নিজস্ব প্রতিবেদক
সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনা চলছে। গতকাল সোমবার বিকেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রধান ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে আলোচনা শুরু হয়।
আলোচনার শুরুতে দলগুলোকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি সারা দিনে যত মিটিং করি সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাই যখন আপনাদের সঙ্গে এ রকম বসার সুযোগ পাই, আলাপ করার সুযোগ পাই। কারণ এখানেই সবাই মিলে বাংলাদেশের প্রকৃত ভবিষ্যৎ রচনা করা হচ্ছে। এটা আমাকে শিহরণ জাগায় যে এ রকম একটা কাজে আমি জড়িত হতে পেরেছি, নিজেকে যুক্ত করতে পেরেছি। আপনাদের কথা শোনার জন্য, এটা কিভাবে আপনারা গাইড করবেন, কোথায় নিয়ে যাবেন।’
প্রধান উপদেষ্টা বক্তব্য দেওয়ার পর তিনি ও কমিশনের সদস্যরা রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য শোনেন।
বিএনপির পক্ষ থেকে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার বিষয়ে ৩১ ডিসেম্বরের এক দিন পরেও সময় দিতে রাজি নয়। সংবিধান সংশোধন ছাড়া প্রয়োজনীয় অন্যান্য সব ধরনের সংস্কার এক মাসেই সম্পন্ন করা সম্ভব।’
ঠিক এরপরই জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘কিছু দল ভারতের কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়। তাদের বক্তব্যের সঙ্গে ভারতের বক্তব্যের পার্থক্য নেই। তারা ভারতের সুরেই নির্বাচনের কথা বলছে।’
নাহিদের বক্তব্যের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইলে যদি ভারতের সুরে কথা বলা হয়, তাহলে যারা নির্বাচন পেছাতে চায় তারা নিশ্চয়ই যুক্তরাষ্ট্র কিংবা চীনের সুরে কথা বলছে।
বৈঠকে উপস্থিত কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা বলেন, এ নিয়ে বিএনপি ও এনসিপির প্রতিনিধিদের মধ্যে তীব্র বিতণ্ডা শুরু হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ‘বৈঠকে মূলত সংস্কার নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়ে দাঁড়ায় নির্বাচনের সময়কাল নিয়ে বিতর্কে। বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে তর্ক হয় নির্বাচন ডিসেম্বরে হওয়া উচিত কি না তা নিয়ে।’
বৈঠক শেষে বিএনপির সিনিয়র নেতা সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করা সম্ভব। নির্বাচন নিশ্চিত করতে যেসব সংস্কার দরকার, বিশেষ করে নির্বাচনী সংস্কার, সেগুলো চিহ্নিত করে সম্মতির ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা জরুরি।’