ডিজিটাল রিপোর্ট
‘আমি খালেদা জিয়া বলছি’—এমনভাবে বিএনপি চেয়ারপারসনের কণ্ঠ নকল করে ১১ মাসে ২৬ কোটির বেশি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মো. মোতাল্লেছ হোসেন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) তদন্তে উঠে এসেছে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য। তবে অভিযুক্ত মোতাল্লেছ এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
বিএফআইইউর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৫ নভেম্বর থেকে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে রাজধানীর গুলশান এলাকার সিটি ব্যাংক শাখায় মোতাল্লেছের নামে জমা হয় প্রায় ৬ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। হঠাৎ এত বিপুল পরিমাণ লেনদেন নজরে এলে ব্যাংকের পক্ষ থেকে তার তথ্য চাওয়া হয়। এরপরই শুরু হয় তদন্ত।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, মোতাল্লেছ হোসেন ও তার প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা ৯টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। সাতটি হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মোট ২৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। কেবল তিন মাসেই জমা হয় ১১ কোটি ১১ লাখ টাকা। অথচ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তার আয়কর রিটার্নে সম্পদের পরিমাণ দেখানো হয়েছিল মাত্র ৩৪ লাখ টাকা। এত অর্থ কীভাবে এল, তার কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি তিনি।
বিএফআইইউর অনুসন্ধান বলছে, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কণ্ঠ নকল করে মানুষের কাছ থেকে টাকা আদায় করতেন মোতাল্লেছ ও তার সহযোগীরা। এই অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অর্থ জমা হয় বিভিন্ন হিসাবে। তদন্তের শুরু থেকেই তিনি পলাতক।
অভিযুক্ত মোতাল্লেছ হোসেন ঢাকার একটি পোশাক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের (অকো-টেক্স লিমিটেড) পরিচালক। তার পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক হিসাবে নমিনি হিসেবে আছেন মোতাল্লেছের ভাই (কাজিন) পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. কাইয়ুমুজ্জামান, যিনি বর্তমানে নৌ পুলিশে কর্মরত।
এ বিষয়ে মোতাল্লেছ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভুয়া, বানোয়াট ও মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক আইন কর্মকর্তা ও বিএফআইইউয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা এই হয়রানির পেছনে আছেন।’