ডিজিটাল রিপোর্ট
‘শিমুল চেয়ারম্যান ডিক্লার দিছে, “একবারেই মাইরা ফালা, ২০টা মামলা অইলে অইব, আমি দেখব, রুবির বংশ নির্বংশ কইরা ফালা।” আমার ওপর ৫০ জন পোলাপাইন হামলা চালাইছে, এরা সব কাশিমপুর ও কড়ইবাড়ির লোক। এদের মধ্যে আবু মেম্বার, বক্কর মেম্বার, বাচ্চু মেম্বার, শিমুল চেয়ারম্যান, শরীফ, বাছির, আতিক, আনু মেম্বার, রফিক, রবিউল, টেগড়া জুয়েল, বিল্লাল বাবুর্চিসহ আরো অনেকে ছিল তাদের মুখ চিনি নাম জানি না।’
কুমিল্লার মুরাদনগরে ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যার সময় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া রুমা আক্তারকে সংকটাপন্ন অবস্থায় অ্যাম্বুল্যান্সে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পথে একটি ভিডিও রেকর্ডে তিনি এসব কথা বলেন। বর্তমানে রুমা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তার মাথা ও মুখমন্ডলে বেশ কিছু সেলাই দেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেড় মিনিটের ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, শিমুল চেয়ারম্যান ডিক্লার দেওয়ার পরই সবাই হামলা চালায়।’ আমারে আনু মেম্বার বাঁশ দিয়ে পিটাইছে, রক্তের সাগর হয়ে গেছে, তবুও তাদের মন গলে নাই। অনেকের মুখ চিনি, নাম তো জানি না।
ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া রুমার অপর বোন রিক্তা আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, শিমুল চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, আমি মামলার বাদী হওয়ায় আমাকে নানাভাবে খুনের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যারা আমার মা-বোন ও ভাইকে হত্যা করেছে ছোট ছোট বাচ্চাদের এতিম করছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।
এদিকে গত দুই দিনে ঢাকায় র্যাবের হাতে ও কুমিল্লায় সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার ৮ আসামি বর্তমানে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। তাদের সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাঙ্গরা বাজার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আবু তাহের ভূঁইয়া।
মঙ্গলবার কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ১১ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক মমিনুল হকের আদালতে আসামিদের রিমান্ডের শুনানি হবে। তবে ঘটনার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লালকে এখনো গ্রেপ্তার করা যায়নি।
সোমবার (৭ জুলাই) বিকালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখনো পুরুষশূন্য কড়ইবাড়ি ও কাশিমপুর এলাকা। গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাড়িছাড়া গ্রামের পুরুষরা। এলাকার দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে।
তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয় এমন কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, মূল অভিযুক্ত শিমুল বিল্লাল চেয়ারম্যান পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নিহত রুবির বাড়িতে এখনো পুলিশ মোতায়েন করে রাখা হয়েছে। এ মামলায় সেনাবাহিনী ও র্যাবের পৃথক অভিযানে আট আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত এ ব্যাপারে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে আদালতে প্রত্যেকের ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। এরই মধ্যে প্রকৃত আসামিদের নাম-পরিচয় জানতে পেরেছে। তাদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালানো হচ্ছে।