অতিরিক্ত চিনিজাতীয় খাবার থেকে হতে পারে ফ্যাটি লিভার, জানুন করণীয়

অতিরিক্ত চিনিজাতীয় খাবার থেকে হতে পারে ফ্যাটি লিভার, জানুন করণীয়

অনলাইন ডেস্ক

 

প্রক্রিয়াজাত খাবার ও চিনিযুক্ত পানীয় সম্পর্কে আমরা প্রায়ই সতর্কতা শুনে থাকি। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে—এই ধরনের খাবারে থাকা ফ্রুক্টোজ আমাদের শরীর, বিশেষত লিভারের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। তবে আশার কথা হচ্ছে, মাত্র নয় দিনের মধ্যে খাদ্যাভ্যাসে সামান্য পরিবর্তন এনে লিভারের ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে। চলুন, জেনে নিই।

প্রক্রিয়াজাত খাবার ও পানীয়ে প্রচুর পরিমাণে ব্যবহৃত হয় ফ্রুক্টোজ, যা একধরনের চিনি। এটি সরাসরি লিভারে চর্বি জমাতে সহায়তা করে, যার ফলে সৃষ্টি হয় নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ। এই রোগ বর্তমানে উন্নত দেশগুলোর প্রায় ৩০% প্রাপ্তবয়স্কদের প্রভাবিত করছে, আর ৯০% স্থূল ও ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি এর ঝুঁকিতে রয়েছেন। ফ্রুক্টোজের কারণে লিভারে চর্বি জমে প্রদাহ তৈরি হয়, কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং লিভারের স্বাভাবিক কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত হয়।

এতে ইনসুলিন প্রতিরোধ তৈরি হয়। যা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও অন্যান্য বিপাকীয় রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও টুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা স্থূলকায় কিছু ল্যাটিনো ও আফ্রিকান-আমেরিকান তরুণদের নিয়ে এক গবেষণা করেন। তারা অংশগ্রহণকারীদের ফ্রুক্টোজযুক্ত খাবারের পরিবর্তে গ্লুকোজযুক্ত খাবার দেন, যদিও মোট ক্যালরির পরিমাণ একই রাখা হয়।

মাত্র ৯ দিন পর, ফলাফল ছিল অবাক করার মতো। দেখা গেছে লিভারের চর্বি ২০% হ্রাস পেয়েছে, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বেড়েছে, শরীরের ওজনে বড় কোনও পরিবর্তন ছাড়াই এই উপকার মিলেছে
অর্থ্যাৎ ফ্রুক্টোজ হ্রাসই এই ইতিবাচক পরিবর্তনের মূল কারণ। গবেষকরা বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ প্রতিরোধ করা সম্ভব, যদি সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা হয়।

প্রক্রিয়াজাত ফ্রুক্টোজ বনাম প্রাকৃতিক চিনি
দফলমূলেও ফ্রুক্টোজ থাকে, তবে তা প্রাকৃতিক। এতে আঁশ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা শরীরের জন্য উপকারী।

বিপরীতে, প্রক্রিয়াজাত খাবার থেকে প্রাপ্ত ফ্রুক্টোজে এসব উপাদান থাকে না। ফলে তা শরীরে চর্বি জমা ও বিপাকীয় সমস্যা তৈরি করে।
আপনার লিভারকে সুরক্ষিত রাখতে যা করতে পারেন

১। চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন:
সোডা, কোল্ড ড্রিঙ্কস-এর পরিবর্তে পান করুন পানি, ভেষজ চা বা ফলের টুকরো মেশানো প্রাকৃতিক পানি।

২। খাদ্যের লেবেল পরীক্ষা করুন:
স্ন্যাকস, সিরিয়াল, সস ইত্যাদিতে উচ্চ-ফ্রুক্টোজ কর্ন সিরাপ বা অতিরিক্ত চিনি আছে কি না তা দেখে নিন।

৩। প্রাকৃতিক ও আঁশযুক্ত খাবার খান:
প্রক্রিয়াজাত খাবারের বদলে ঘরে তৈরি খাবার ও পুরো শস্যজাতীয়, ফলমূল-সবজি খান।

৪। ১০০% ফলের রস সীমিত করুন:
এই রসেও ফ্রুক্টোজের মাত্রা বেশি হতে পারে, তাই পরিমিতভাবে পান করুন।

৫। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন:
যদি আপনার স্থূলতা, ডায়াবেটিস বা ফ্যাটি লিভার সমস্যা থাকে, তবে দ্রুত চিকিৎসা নিন।

সূত্র : টাইমস অফ ইন্ডিয়া

শীর্ষ সংবাদ স্বাস্থ্য