১৫ বছর যাদের জন্য লড়াই করলাম, তারা এখন আমাকে ধাক্কা দেয়: রুমিন ফারহানা

১৫ বছর যাদের জন্য লড়াই করলাম, তারা এখন আমাকে ধাক্কা দেয়: রুমিন ফারহানা

নিজস্ব প্রতিবেদক

 

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ ও ৩ আসনের সীমানা নিয়ে শুনানিতে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী রুমিন ফারহানা। হাতাহাতির একপর্যায়ে একজন তাঁকে ধাক্কাও দেন।

এ সময় ক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ‌‘বিএনপির নেতা-কর্মীদের জন্য গত ১৫ বছর লড়াই করলাম। তারা আমাকে এখন ধাক্কা দেয়। তো ঠিক আছে, ধাক্কার বদলে তো ধাক্কা আসবেই, তাই না! নির্বাচনের আগে সীমানা নিয়ে নিজের দলে এমন পরিস্থিতি হলে নিবার্চনে কী হবে অনুমেয়।’

আজ রোববার রাজধানীর আগাঁরগাওয়ে নির্বাচন ভবনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ ও ৩ আসনের সীমানা নিয়ে শুনানি ছিল। শুনানির একপর্যায়ে বিএনপির দুই পক্ষ মারামারিতে জড়িয়ে যায়।

এমন পরিপ্রেক্ষিতে রুমিন ফারহানা সাংবাদিকদের সামনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, আজ দুপুর ১২টার দিকে নির্বাচন ভবনে শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন ও অন্য নির্বাচন কমিশনাররা উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সামনে বেলা পৌনে ১টার দিকে বিএনপির দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি ২০২৪ সালে সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে ছিল। ইসি সম্প্রতি সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলার সঙ্গে বিজয়নগর উপজেলার বুধস্তি, চান্দুয়া ও হরষপুর ইউনিয়ন যুক্ত করে খসড়া প্রকাশ করে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের সীমানা নিয়ে সিইসির সামনে হাতাহাতিব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের সীমানা নিয়ে সিইসির সামনে হাতাহাতি
অন্যদিকে গত বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর নিয়ে ছিল। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলার সঙ্গে ইছাপুর, চম্পানগর, পত্তন, দক্ষিণ সিংগারবিল, বিষ্ণপুর, চর ইসলামপুর ও পাহাড়পুর ইউনিয়ন যুক্ত করে ইসি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২ ও ৩ আসনের খসড়া প্রকাশের পর পক্ষে–বিপক্ষে আবেদন জমা পড়ে।

আজ দুপুরে শুনানির একপর্যায়ে বিএনপির দুই পক্ষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং মারামারি শুরু করে। এরপর ইসি কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ইসি সচিব পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও ৩ আসনের জন্য শুনানি শেষ করেন এবং তাদের শুনারি পর কক্ষ ত্যাগ করার অনুরোধ জানান।

শুনানিতে অংশ নিয়ে বিএনপির রুমিন ফারহানা ইসির প্রকাশিত খসড়ার পক্ষে তাঁর যুক্তি তুলে ধরেন। অন্যদিকে বেশ কয়েকজন খসড়ার বিপক্ষে তাঁদের অবস্থান তুলে ধরেন।

খসড়ার বিপক্ষে থাকা শুনানিতে অংশ নেওয়া নেতারা বলেন, বিজয়নগর উপজেলা থেকে তিনটি ইউনিয়ন (বুধস্তি, চান্দুয়া ও হরষপুর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে যুক্ত করা হয়েছে। তারা অখণ্ড উপজেলা চান।

শুনানিতে মারামারি হয়েছে জানিয়ে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ‌‘অত্যন্ত দুঃখজনক ব্যাপার হলো, এখানে মারামারি হয়েছে। আমি যেহেতু একজন আইনজীবী, আমি মনে করেছি, আমার কেস আমি নিজেই প্রেজেন্ট করব। সো, আমার কেস আমি প্রেজেন্ট করেছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩-এর যিনি প্রার্থী, তিনি সদলবলে ২০-২৫ জন মিলে গুন্ডাপান্ডার মতন আচার-আচরণ করা অত্যন্ত দুঃখজনক, অত্যন্ত লজ্জাজনক। আমি মনে করি, এটা কমিশনের যে গাম্ভীর্য, যে সম্মান, তার সঙ্গে যায় না।’

তিনি বলেন, ‘অলমোস্ট আমার গায়ে ধাক্কা দিয়ে আমাকে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। যেই বিএনপির নেতাকর্মীদের জন্য গত ১৫ বছর লড়াই করলাম, তারা আমাকে এখন ধাক্কা দেয়। তো ঠিক আছে, ধাক্কার বদলে তো ধাক্কা আসবেই, তাই না!

বিএনপি নেতা বলেন, ‘নির্বাচনের আগে একটা সীমানা নিয়ে যদি এরকম আচরণ আমরা দেখি নিজের দলের মধ্যে, নির্বাচনে কী হবে? প্রথমে আমাকে পাঞ্জাবি পরা একজন ধাক্কা দিয়েছে। আমার লোক তো বসে থাকবে না। যখন আমার লোকজনকে মারধর করেছে আমার লোকজন জবাব দিয়েছে—সিম্পল।’

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ