এআই ব্যবহার করে কোনো লাভ হয়নি ৯৫ শতাংশ কোম্পানির: এমআইটির গবেষণা

এআই ব্যবহার করে কোনো লাভ হয়নি ৯৫ শতাংশ কোম্পানির: এমআইটির গবেষণা

অনলাইন ডেস্ক

 

বিশ্বজুড়ে কোম্পানিগুলো খরচ কমানো ও মুনাফা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি দ্রুত গতিতে গ্রহণ করছে। তবে বেশির ভাগ প্রকল্পই কোনো বাস্তব ফল দিচ্ছে না বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত প্রতিষ্ঠান ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এমআইটি)।

নতুন গবেষণা প্রতিবেদন ‘দ্য জেনএআই ডিভাইডেড: স্টেট অব এআই ইন বিজনেস ২০২৫’ শিরোনামের বলা হয়েছে, বর্তমানে কোম্পানিগুলো জেনারেটিভ এআইতে প্রায় ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। অথচ এর ৯৫ শতাংশ থেকেই কোনো আর্থিক রিটার্ন পাচ্ছে না প্রতিষ্ঠানগুলো।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, গবেষণায় ৩০০টি এআই ব্যবহারের ঘটনা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এবং প্রায় ৩৫০ জন কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলা হয়। চ্যাটজিপিটি ও কোপাইলটের মতো এআই টুল সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হলেও, মাত্র ৫ শতাংশ কোম্পানি এসব টুল ব্যবহার করে লাখ লাখ ডলারের মুনাফা করতে পারছে। বাকি কোম্পানিগুলো এখনো মুনাফা করতে পারছে না।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘৮০ শতাংশেরও বেশি কোম্পানি টুলগুলো পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করেছে এবং প্রায় ৪০ শতাংশ কোম্পানি তা কার্যকরভাবে চালু করেছে। তবে টুলগুলো মূলত ব্যক্তিগত উৎপাদনশীলতা বাড়ালেও, কোম্পানির মোট মুনাফা বা ক্ষতির ওপর তা কোনো ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে না। এদিকে, বড় সংস্থার জন্য তৈরি কাস্টম ও কেনা এআই সিস্টেমগুলো চুপিসারে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’

বিশ্লেষকেরা জানিয়েছেন, এই ব্যর্থতার কারণ এআই মডেলগুলোর অকার্যকারিতা নয়, বরং সেগুলোকে প্রতিষ্ঠানের আগের কাজের ধারা সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। কর্মীদের মধ্যে শেখার ঘাটতিও অন্যতম কারণ। তবে বেশির ভাগ কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দোষ দিচ্ছেন এআই মডেলগুলোকেই।

সম্প্রতি জনপ্রিয় ফাস্ট ফুড চেইন টাকো বেলের চিফ ডিজিটাল অ্যান্ড টেকনোলজি অফিসার ডেন ম্যাথিউজ জানিয়েছেন, তাঁদের ড্রাইভ-থ্রু রেস্টুরেন্টে এআই ব্যবহার কিছুটা উল্টো ফলাফল এসেছে। ফলে তাঁরা এ প্রযুক্তির ব্যবহার কিছুটা ধীর করছে।

তিনি বলেন, ‘কিছু সময় মানুষই আদেশ নেওয়ার জন্য বেশি কার্যকর, বিশেষ করে যখন রেস্টুরেন্টগুলো ব্যস্ত থাকে। আমাদের দলকে আমরা গাইড করছি—কোন সময় এআই ব্যবহার উপযুক্ত, আর কখন হস্তক্ষেপ করা দরকার।’

এদিকে জুনে একটি গবেষণা প্রকাশ করে প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল। এই গবেষণা তারা দাবি করে, নতুন প্রজন্মের এআই মডেলগুলো প্রকৃত অর্থে চিন্তা বা যুক্তি বিশ্লেষণ করতে পারে না।

ওই গবেষণায় আরও বলা হয়, ক্লদ, ডিপসিক–‘আ ১ এবং ও৩ মিনি’-এর মতো এআই মডেলগুলো কেবল আগের প্যাটার্ন বা ধরন মনে রাখে এবং সেই অনুযায়ী মিলিয়ে কাজ করে।

অ্যাপল জানায়, প্রশ্নের ধরন বদলে গেলে কিংবা জটিলতা বাড়লে এই মডেলগুলো প্রায় ভেঙে পড়ে। সহজ ভাষায়, যতক্ষণ পর্যন্ত প্যাটার্ন স্পষ্ট ও পূর্বপরিচিত থাকে, ততক্ষণ এআই কার্যকর। কিন্তু প্যাটার্ন জটিল হলে বা নতুন হলে এরা কার্যক্ষমতা হারায়।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

তথ্য প্রুযুক্তি শীর্ষ সংবাদ