বাকৃবি প্রতিনিধি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) কম্বাইন্ড (বি.এসসি ইন ভেট ও এএইচ) ডিগ্রির দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় জরুরি সিন্ডিকেট সভায় আবাসিক হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের আজ সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করে।
এর প্রতিবাদে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা দুপুর ২টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ তুলে নিতে আল্টিমেটাম দিয়ে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করে।
এ সময় পশুপালন অনুষদের শিক্ষার্থী এহসানুল হক হিমেল বলেন, ‘গতকাল ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সামনে বহিরাগতরা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছিল। এরপর শিক্ষকরা আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে হল ত্যাগের নির্দেশ দিচ্ছেন। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে প্রশাসন যে রকম আচরণ করেছে, ঠিক সেই রকম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সঙ্গে আচরণ করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বহিরাগতদের দ্বারা আমাদের মারধর ও ভয় দেখানোর চেষ্টা করছেন। আমরা এখন নিরাপদ নই, প্রবল নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।’
ফারিসা হক নিছুম বলেন, ‘রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন মেয়েদের হলে পানি ও গ্যাস সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। ফলে আতঙ্কে কিছু শিক্ষার্থী হল ত্যাগ করেছেন। তবে আমরা হল ছাড়িনি। আমাদের ভাইদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-
১. অবৈধভাবে হল শূন্য করার নির্দেশনা দুপুর ২টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে।
২. হলগুলোতে চলমান সব ধরনের সুবিধা নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে হবে।
৩. এই প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর শিক্ষকদের মদদে বহিরাগত দিয়ে হামলার দায়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে।
৪. বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দ্বারা ককটেল বিস্ফোরণ, লাইব্রেরি ও স্থাপনা ভাঙচুর এবং দেশীয় অস্ত্র দ্বারা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্থার ঘটনার জন্য উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
৫. হামলায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের যেমন, কৃষি সম্প্রসারণ শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান সরকার, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. তোফাজ্জল হোসেন, কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড শরীফ আর রাফি, কৃষি অনুষদের কামরুজ্জামান, পোল্ট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বজলুর রহমান মোল্যা এবং পশু প্রজনন ও কৌলিবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসেন, ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড মোহাম্মদ আশিকুল ইসলাম দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৬. গত ১ মাস ধরে চলমান যে একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন করে আসছি, সেই একক ডিগ্রি অবিলম্বে প্রদান করতে হবে। তিনটি ভিন্ন ডিগ্রির প্রস্তাব হিসেবে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।