নায়কের সঙ্গে বনেবাদাড়ে দৌড়ানো, গান করা, ভিলেন নায়িকাকে তুলে নিল নায়কের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য, জমিদারপুত্র বিয়ে করল দরিদ্র ঘরের এক মেয়েকে। এমন সব চিত্র এখনো দেখা যায় ঢাকাই চলচ্চিত্রে। যার অর্থ হলো ছবির গল্পে নায়কই প্রধান, নায়িকার তেমন কোনো ভূমিকা নেই। আসলেই আমাদের চলচ্চিত্রে নায়িকা ব্যবহার হয়ে আসছে কেবল নায়কের প্রয়োজনে। এটি বলতে গেলে পঞ্চাশ দশকে আমাদের চলচ্চিত্রের যাত্রার পর থেকে একটি চিরন্তন দৃশ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এখানে একেবারেই যে নায়িকাপ্রধান চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়নি তা কিন্তু নয়। তবে এর সংখ্যা একেবাইে অপ্রতুল। আমাদের নায়িকানির্ভর চলচ্চিত্র এখনো ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ কিংবা ‘সারেং বৌ’-এর মধ্যে সীমিত হয়ে আছে। চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের মতে, ঢাকাই চলচ্চিত্র এখনো পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। অথচ এই চলচ্চিত্রের মাধ্যমেই এসব বৈষম্য উঠে আসার কথা ছিল।
নায়িকা শাবানা বলেছিলেন, ‘ওই যে, যিনি নায়কের একক ঘোড়দৌড়ে মাঝেমধ্যে লাগাম টেনে ধরেন। দু-একটি গান গেয়ে আর নেচে দর্শকদের অবসাদ দূর করেন। পরিশেষে সমাপ্ত লেখা ওঠার সময় নায়ককে জড়িয়ে ধরে শুকনো হাসি হাসতে পারেন- তিনিই তো নায়িকা।’ অভিনেত্রী শাবানা যথার্থই বলেছেন, এখন পর্যন্ত ঢাকাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় নায়িকানির্ভর কোনো চলচ্চিত্র নির্মিত হয়নি। শাবানা, কবরী, ববিতা, নূতন, মৌসুমী, শাবনূরকে নিয়ে দু-একটি করে নায়িকানির্ভর চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়েছে। তবে এসব চলচ্চিত্রে নায়িকা কিন্তু নায়কের স্থানে বসতে পারেননি। সিনেমার কাহিনির আরোপিত নারীত্ব-ই নায়িকাকে প্রধান চরিত্রে পরিণত করেছে।বিস্তারিত