হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থাপিত ই-গেট ব্যবস্থাপনা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। একই সঙ্গে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য পাসপোর্ট ফি কমানোর পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত কোর কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব তথ্য জানান।
ই-গেট ব্যবস্থাপনা চালুর প্রস্তুতি
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ই-গেট ইনস্টল করা হয়েছে। আমরা আশা করছি, আগামী দুই-চার দিনের মধ্যেই এটি চালু করতে পারব। সর্বোচ্চ আগামী সপ্তাহের মধ্যেই যাদের ই-পাসপোর্ট আছে, তারা পাসপোর্ট স্ক্যান করে সরাসরি ই-গেট দিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।”
সরকারের এ উদ্যোগের ফলে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুততর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে ই-পাসপোর্টধারীদের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে, এবং এই সুবিধা যাত্রীসেবার মানোন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে।
রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ সুবিধা
সভার আলোচনায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “আমরা শুধু বলি রেমিট্যান্সযোদ্ধা, কিন্তু তারা যথাযথ সম্মান পান না। এজন্য আপাতত তাদের জন্য পাসপোর্ট ফি কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
ফি কতটা কমানো হবে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “দেশ তো অনেক, সবার সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি নির্ধারণ করা হবে।”
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, “এখন থেকে রেমিট্যান্সযোদ্ধা হলেও পাসপোর্ট ফি সাধারণ নাগরিকদের সমান থাকবে। তাছাড়া তারা যেন বিমানে ভালো সার্ভিস পান, বিমানবন্দরেও যেন সম্মানজনক সেবা পান—সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।”
বিমানের ভাড়া ও সেবার মান
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিট ভাড়া কমানো হবে কিনা—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অবশ্যই চেষ্টা করব। যেহেতু এটি একটি বাণিজ্যিক ও প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্র, তাই লাভজনক অবস্থান বিবেচনায় রেখে বিমান যতটুকু সুবিধা দিতে পারে, সেটি দেওয়ার চেষ্টা করবে।”
প্রবাসীদের ই-পাসপোর্ট নিশ্চিতের আশ্বাস
তিনি আরও জানান, “আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য ই-পাসপোর্ট প্রদান সম্পন্ন করা হবে। এই কার্যক্রমে যাতে কোনো জটিলতা না থাকে এবং প্রবাসীরা সহজেই ই-পাসপোর্ট পেতে পারেন, সেই দিকেও নজর দেওয়া হবে।”
অগ্নিকাণ্ড নিয়ে আলোচনা
সভায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি অগ্নিকাণ্ড নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা বিশ্লেষণ করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধ করা যায়।”
সরকারের এসব পদক্ষেপের লক্ষ্য হচ্ছে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর করা, প্রবাসীদের প্রতি শ্রদ্ধা ও দায়িত্বশীলতা দেখানো, এবং আন্তর্জাতিক মানের সেবার নিশ্চয়তা প্রদান। বিশেষ করে রেমিট্যান্সযোদ্ধাদের জন্য বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো সরকারের প্রবাসী বান্ধব অবস্থানকে স্পষ্ট করে তুলছে।