যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে সংকট: ট্রাম্পের ‘ন্যায়সঙ্গত’ সমঝোতার প্রস্তাব ও শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে সংকট: ট্রাম্পের ‘ন্যায়সঙ্গত’ সমঝোতার প্রস্তাব ও শুল্ক বৃদ্ধির হুমকি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে ভারসাম্য পুনঃস্থাপনের জন্য একটি ন্যায়সঙ্গত বাণিজ্যিক চুক্তি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, যদি চীন এই চুক্তিতে সম্মতি না দেয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ১৫৫ শতাংশ পর্যন্ত রপ্তানি শুল্ক আরোপ করতে পারে।

সোমবার হোয়াইট হাউসে অস্ট্রেলিয়ার প্রেসিডেন্ট অ্যান্থনি অ্যালবানিজের সঙ্গে বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, “আমরা চীনের সঙ্গে একটি ন্যায্য বাণিজ্যিক চুক্তি করতে চাই এবং আমি আশা করছি, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এ ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসবেন। আশা করি, চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরাও উপস্থিত থাকবেন।”

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতায় অগ্রসর না হলে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে ট্রাম্প জানান, “যদি তারা ন্যায্য চুক্তিতে সম্মত না হয়, তাহলে চীনা পণ্যের ওপর ১৫৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে। হয় তারা সমঝোতায় আসবে, নয়তো উচ্চ শুল্ক বহন করতে হবে।”

ট্রাম্প বলেন, “অনেক দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্যায্য সুবিধা নিচ্ছে, যা বন্ধ করতে হবে।” যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীনের বিপুল পরিমাণ পণ্য প্রবেশ করায় বাণিজ্যের ভারসাম্যহীনতা দীর্ঘদিন ধরে উদ্বেগের বিষয় ছিল। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে খাদ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে মহাকাশ গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল।

২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ট্রাম্প চীনের সঙ্গে বাণিজ্যে ভারসাম্য আনাকে তার প্রশাসনের অন্যতম অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

২০১৮ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর ধার্যকৃত রপ্তানি শুল্কের পরিমাণ ৩০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশে উন্নীত করে। পাল্টা হিসেবে চীনও মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে ১২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করে। পরে উভয় দেশই ৯০ দিনের জন্য এই বর্ধিত শুল্ক স্থগিত রাখে, যা নভেম্বর মাসে শেষ হবে।

এই অবস্থায় আগামী ৩১ অক্টোবর দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৈঠকে বাণিজ্য বিরোধ মীমাংসায় কোনো অগ্রগতি সাধিত হবে কি না তা নজর রাখা হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য বিরোধ কেবল দুই দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, বরং এটি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তাই এপেক সম্মেলনে এই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সূত্র: এএফপি

আন্তর্জাতিক শীর্ষ সংবাদ