সম্প্রতি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যা টেলিযোগাযোগ সেবার অব্যাহত প্রবাহে বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) দেশব্যাপী টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোর অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে সংশ্লিষ্ট অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছে।
বিটিআরসি থেকে জারি করা এক স্মারকে বলা হয়েছে, টেলিযোগাযোগ সেবার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে এবং অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সমস্ত অপারেটরকে ডাটা সেন্টার, নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার (এনওসি), বিটিএস সাইটসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় কার্যকর অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা প্রবর্তন, জরুরি ব্যাকআপ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এবং প্রশিক্ষিত জরুরি প্রতিক্রিয়া টিম গঠন করতে হবে।
বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের পরিচালক ড. মো. সোহেল রানা স্মারকে এ নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, “প্রতিটি টেলিযোগাযোগ স্থাপনায় অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা কার্যকর থাকলেই সেবা অব্যাহত থাকবে এবং অগ্নিকাণ্ড বা অন্যান্য দুর্যোগে সেবা বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি কমবে।”
বিটিআরসির নির্দেশনায় আরো বলা হয়, সেবা অব্যাহত রাখতে প্রতিটি স্থাপনায় পর্যাপ্ত ব্যাকআপ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এবং বিকল্প নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা রাখা প্রয়োজন। এর পাশাপাশি, প্রতিটি স্থাপনায় নিরাপত্তা এবং নজরদারি ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। এই ব্যবস্থার মধ্যে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা, বস্তুগত নিরাপত্তা, টহল, মনিটরিং ও নজরদারি অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এছাড়া, অগ্নিকাণ্ড বা অন্যান্য দুর্ঘটনায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সক্ষম একটি প্রশিক্ষিত জরুরি প্রতিক্রিয়া টিম গঠন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই টিমের সদস্যদের প্রাথমিক অগ্নিনির্বাপক প্রশিক্ষণও প্রদান করতে হবে, যাতে তারা যে কোনো বিপদ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়।
অপারেটরদের আরও বলা হয়েছে যে, ৩০ অক্টোবরের মধ্যে তাদের গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে বিটিআরসিকে বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। বিশেষ করে, কেপিআই হিসেবে বিবেচিত স্থাপনাগুলোর ক্ষেত্রে ফায়ার সেফটি কমপ্লায়েন্স সার্টিফিকেট প্রতিবেদনও জমা দিতে হবে একই সময়ের মধ্যে।
এটি নিশ্চিত করবে যে, দেশের টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্যোগের মোকাবেলায় প্রস্তুত এবং সেবার নিরবচ্ছিন্নতা বজায় রাখার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বিটিআরসির এই নির্দেশনা দেশব্যাপী টেলিযোগাযোগ অবকাঠামোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাবে এবং ভবিষ্যতে সম্ভাব্য অগ্নিকাণ্ড বা অন্যান্য বিপদের মধ্যে সেবা অব্যাহত রাখতে সাহায্য করবে। বিশেষত, জরুরি প্রতিক্রিয়া টিম গঠন এবং কার্যকর অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নিশ্চিত করার মাধ্যমে জনগণের জন্য নিরাপদ এবং স্থিতিশীল টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান করা সম্ভব হবে।