রিশাদ হোসেনের আগ্রাসী ইনিংসের পরও সুপার ওভারে ব্যাটিংয়ে কেন নামানো হলো না?

রিশাদ হোসেনের আগ্রাসী ইনিংসের পরও সুপার ওভারে ব্যাটিংয়ে কেন নামানো হলো না?

চলমান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ব্যাট হাতে দারুণ পারফর্ম করেছেন রিশাদ হোসেন। বিশেষ করে মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তার এক ঝোড়ো ইনিংস প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু সুপার ওভারে তার ব্যাটিং না দেখানো নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

ম্যাচে নয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে রিশাদ মাত্র ১৪ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কা মেরে ৩৯ রান করেন। এ ইনিংসটি ছিল দলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে যখন অন্য ব্যাটসম্যানরা রানের জন্য সংগ্রাম করছিলেন। ম্যাচ শেষে যখন দুই দলের স্কোর সমান ২১৩ রানে গিয়ে পৌঁছায়, তখন ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। তবে সুপার ওভারে ইনফর্ম রিশাদকে ব্যাটিংয়ে নামানো হয়নি, আর তা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে এবং ক্রিকেট প্রেমীদের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে।

সুপার ওভারে বাংলাদেশের হয়ে নামেন সাইফ হাসান ও সৌম্য সরকার। সৌম্য আউট হওয়ার পর তার জায়গায় নেমে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু শেষ ৫ বলে ৬ রান প্রয়োজন থাকলেও তারা সেটি মেলাতে পারেননি, ফলে বাংলাদেশ পরাজিত হয়। এই পরিস্থিতিতে রিশাদ হোসেনকে কেন ব্যাটিংয়ে নামানো হয়নি, সেটি ছিল বড় প্রশ্ন।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে সৌম্য সরকারকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এটা কোচ এবং অধিনায়কের পরিকল্পনা ছিল। তারা ভাবেন যে মূল ব্যাটসম্যানদের পাঠানো উচিত।’’ সৌম্য আরো বলেন, “এটি ছিল কোচ ও অধিনায়কের পরিকল্পনার একটি অংশ এবং তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে বাঁহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশন রেখে খেলবে।”

সৌম্য আরও ব্যাখ্যা করেন, “এটা আমরা সবাই চিন্তা করিনি, কোচ আর অধিনায়কের হাতে ছিল। তারা জানত না যে আকিল হোসেন বল করবে, আর যদি আমরা দুজন বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যান পাঠাতাম এবং অফ স্পিনার এসে বল করত, তবে সমস্যা হতে পারত। এজন্যই আমরা বাঁহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশন রেখেছি।”

তিনি আরও বলেন, “আপনারা দেখবেন, তাদের (ওয়েস্ট ইন্ডিজ) পক্ষেও একই কম্বিনেশন ছিল, তাদেরও বাঁহাতি-ডানহাতি ব্যাটিং ছিল।”

রিশাদ না নামানোর সিদ্ধান্তের পাশাপাশি, সুপার ওভারে ৫ বলে ৬ রান করতে ব্যর্থ হওয়ার পেছনে সৌম্য উইকেটের অবস্থাকেই দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “আমার জন্য এটা ব্যর্থতা। একজন বাঁহাতি স্পিনার ছিল, কিন্তু আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে একটা বাউন্ডারি আদায় করতে পারব। তবে উইকেটটা সহজ ছিল না, সহজে চার-ছক্কা মারার মতো ছিল না। বলটা অনেক পুরোনো হয়ে গিয়েছিল।”

তিনি আরও বলেন, “৫০ ওভারের পর বল মারলেও যাচ্ছিল না। বড় হিট করতে গেলে উইকেটের সাহায্যও প্রয়োজন হয়। বলটা স্লো আসছিল এবং অনেক বেশি টার্ন করছিল। পরবর্তী সময়ে যদি এমন উইকেট আসে, তাহলে আমাদের সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে, কীভাবে বড় শট খেলা যায়।”

রিশাদ হোসেনের ব্যাটিং না দেখানোর সিদ্ধান্ত এবং সুপার ওভারে ব্যর্থতা, ক্রিকেটবিশ্বে নানা আলোচনা সৃষ্টি করেছে। যদিও কোচ এবং অধিনায়কের পরিকল্পনা ছিল মূল ব্যাটসম্যানদের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার, তবে রিশাদ হোসেনের ইনফর্ম পারফরম্যান্স এবং সুপার ওভারে তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর বিষয়টি থেকে যাবে এক প্রশ্নবোধক চিহ্ন।

খেলাধূলা শীর্ষ সংবাদ