মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে যুবক নিহত

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে ককটেল বিস্ফোরণে মো. জাহিদ (২০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এই ঘটনা বুধবার (২২ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঘটে। গুরুতর আহত অবস্থায় জাহিদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জাহিদ জেনেভা ক্যাম্পের বাসিন্দা ছিলেন এবং তিনি পাঁচ বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। জানা গেছে, তিনি রাজধানীর কল্যাণপুরে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের একটি দোকানে কাজ করতেন। নিহতের বাবা মো. ইমরান (মৃত) ছিলেন।

জাহিদের বন্ধু আফতাব হোসেন জানান, বুধবার রাতে জেনেভা ক্যাম্পের ভেতরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলছিল। জাহিদ তা দেখতে বাসা থেকে বের হয়ে যান। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে একটি ককটেল জাহিদের পায়ের সামনে বিস্ফোরিত হয়, যার ফলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জেনেভা ক্যাম্পে প্রায়ই মাদক কারবারীদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি ঘটে। বর্তমানে, বুনিয়া সোহেল গ্রুপ ও পিচ্চি রাজা-চুয়া সেলিম গ্রুপের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের কারণে ক্যাম্পে অস্থিরতা চলছে। গত কয়েকদিন ধরেই এই দুই গ্রুপের মধ্যে সহিংস ঘটনা ঘটছে।

এছাড়া, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সম্প্রতি জেনেভা ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ৩২টি ককটেলসহ বেশ কয়েকজন ব্যক্তিকে আটক করেছে। পুলিশের কাছে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এই গ্রুপগুলোর মধ্যে প্রায়ই মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি এবং অন্যান্য অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক নিহত জাহিদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে এবং পুলিশ ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।

এই হত্যাকাণ্ডের পর, সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণের মধ্যে আতঙ্ক এবং অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। স্থানীয়রা দাবি করেছেন, যদি পুলিশ ও প্রশাসন আরও শক্তভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তবে ভবিষ্যতে আরও অনেক প্রাণহানি ঘটতে পারে।

জাহিদের মৃত্যু একটি চরম দুঃখজনক ঘটনা, যা আরও একবার জেনেভা ক্যাম্পে মাদক ব্যবসা এবং গ্রুপ সংঘর্ষের কারণে বাড়তি সহিংসতার দিকে ইঙ্গিত করে।

আইন আদালত শীর্ষ সংবাদ