নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ জানিয়েছেন, যেসব রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম স্থগিত বা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তাদের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কোনও করণীয় নেই। তিনি স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোই শুধু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে। আর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে যদি সরকার কোনও পদক্ষেপ নেয়, তবে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সেটিকে সমর্থন জানাবে।
মাছউদ আরো বলেন, “পলিটিক্যাল পার্টি রেজিস্টার যে পার্টি হোক, যারা রেজিস্টার, তারা শুধুমাত্র ইলেকশনে অংশগ্রহণ করতে পারবে।” এর মানে হল, যে দলগুলো নিবন্ধিত এবং বৈধ, তারা নির্বাচন করার সুযোগ পাবে, অন্য কোনো দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না যদি তারা বৈধ না হয়।
আব্দুর রহমানেল মাছউদ এই মন্তব্য করেছেন, যখন দেশটি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, যে কোনো অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা হলে, সরকার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে এবং নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাতে সমর্থন জানাবে। এর মাধ্যমে তিনি পরিষ্কার করেছেন যে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব, আর নির্বাচন কমিশন সেই ব্যবস্থাগুলোর প্রতি পূর্ণ সমর্থন দেবে।
মাছউদ ডিজিটাল মাধ্যমের অপব্যবহার এবং গুজব ছড়ানো নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যদি নির্বাচন-সংক্রান্ত কোনো ডিজিটাল অপব্যবহার ঘটে বা কোনো গুজব ছড়ানো হয়, তবে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ বিষয়ে নির্বাচনী আইন (আরপিও) সংশোধন করে নতুন একটি সেকশন যুক্ত করা হয়েছে, যা অনুযায়ী, এই ধরনের অপরাধের জন্য সাত বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।
এছাড়া, তিনি উল্লেখ করেন যে, এই শাস্তির বিধান শুধুমাত্র নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়েই প্রযোজ্য হবে, তবে সাধারণ সাইবার সিকিউরিটি আইনও এর আওতাধীন থাকতে পারে।
গুজব মোকাবিলা প্রসঙ্গে, আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, এটি শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, এটি একটি “গ্লোবাল প্রবলেম”। তিনি আরও বলেন, “গুজব মোকাবিলা ও শনাক্তকরণের জন্য যে ধরনের পদক্ষেপ সরকার নেবে, তা নির্বাচন কমিশনের জন্য ভালো হবে।”
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “যেমন, হঠাৎ করে যদি বলা হয় যে, নির্বাচনের কদিন আগে কোনো ক্যান্ডিডেট অমুকের পক্ষে সরে দাঁড়িয়েছে এবং এটা যদি এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ব্যবহার করে করা হয়, তাহলে তা একটি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।”
এছাড়াও, তিনি আশাবাদী যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে প্রস্তাবগুলো দিয়েছে, সেগুলো কার্যকর হলে তা নির্বাচনের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি মনে করেন, সরকার যত ধরনের পদক্ষেপ নেবে, সেটি নির্বাচন কমিশনের জন্য সহায়ক হবে।
এই কথাগুলো দিয়ে, আব্দুর রহমানেল মাছউদ নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচন নিয়ে একটি কঠোর এবং স্বচ্ছ অবস্থান গ্রহণের ইঙ্গিত দিয়েছেন।


