পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ভারতের কাছে এশিয়া কাপের ফাইনালে হারের পর, পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের বিদেশি লিগে খেলার অনুমতি (এনওসি) বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এখন সেই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এনে পিসিবি পাকিস্তানের সেরা ক্রিকেটারদের জন্য বিদেশি লিগে খেলার অনুমতি পুনর্বহাল করেছে। এর ফলে আসন্ন বিগ ব্যাশ, বিপিএলসহ অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণের আশা পুনরুজ্জীবিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট লিগ বিগ ব্যাশে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। সিএর প্রধান নির্বাহী টড গ্রিনবার্গ শুক্রবার নিশ্চিত করেছেন যে, পাকিস্তানের ক্রিকেট সুপারস্টার বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, এবং শাহিন আফ্রিদিরা বিগ ব্যাশে অংশ নিতে পারবেন। তিনি বলেন, “আমরা নিশ্চিত যে, তারা বিগ ব্যাশে খেলবেন, এবং তাদের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। আমরা খুবই উত্তেজিত, কারণ এই গ্রীষ্মে পাকিস্তানের সেরা ক্রিকেটারদের খেলা দেখার জন্য আমরা মুখিয়ে আছি।”
এখন বিগ ব্যাশের আসন্ন মৌসুমে পাকিস্তান থেকে ছয়জন ক্রিকেটার অংশ নেবেন। তারা হলেন- বাবর আজম (সিডনি সিক্সার্স), শাহিন আফ্রিদি (ব্রিসবেন হিট), হাসান আলি (অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স), মোহাম্মদ রিজওয়ান (মেলবোর্ন রেনেগেডস), হারিস রউফ (মেলবোর্ন স্টারস), এবং শাদাব খান (সিডনি থান্ডার)। ৫ ও ৮ জানুয়ারি সিডনি সিক্সার্স ও ব্রিসবেন হিটের মধ্যে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের মুখোমুখি লড়াই হতে যাচ্ছে।
পিসিবির সিদ্ধান্তের পরিবর্তন বিদেশি লিগে খেলার জন্য পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের জন্য একটি বড় সুযোগ সৃষ্টি করেছে। বিগ ব্যাশের পাশাপাশি বিপিএল (বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ) সহ অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছে। তবে পিসিবির পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এটা পরিষ্কার করা হয়নি যে, এই এনওসি সিদ্ধান্ত সব ধরনের বিদেশি লিগের জন্য প্রযোজ্য হবে কিনা।
বিশেষ করে বিপিএল, যেটি বিগ ব্যাশের সময়ের কাছাকাছি সময়ে অনুষ্ঠিত হতে পারে, সেখানে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হলে তা বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য বড় একটি আনন্দের বিষয় হবে। এর আগে পিসিবি বিগ ব্যাশ এবং বিপিএলের মতো লিগে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছিল, তবে এখন সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। এর ফলে পাকিস্তানী ক্রিকেটারেরা বিপিএলসহ বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলতে পারবেন, যা বাংলাদেশি ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য আরও রোমাঞ্চকর হবে।
বিশ্বের অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের মতো, বিগ ব্যাশেও পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। শাহিন আফ্রিদি, মোহাম্মদ রিজওয়ান এবং হারিস রউফ বিগ ব্যাশ ড্রাফটে অন্যতম জনপ্রিয় খেলোয়াড় ছিলেন। বিশেষত শাহিন আফ্রিদির প্রতি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর আগ্রহ অনেক বেশি ছিল। এছাড়া বাবর আজমের প্রতি অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ অনেক বেশি, এবং সিডনি সিক্সার্স ইতোমধ্যে তার জন্য ‘বাবরিস্তান’ নামে একটি ফ্যান জোনও প্রস্তুত করেছে।
বিগ ব্যাশ কর্তৃপক্ষও বাবর এবং রিজওয়ানের মধ্যে সম্ভাব্য মুখোমুখি লড়াইয়ের জন্য ক্যাম্পেইন চালাচ্ছে, যা একদিকে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে উন্মাদনা সৃষ্টি করেছে। তাদের না পেলে বিগ ব্যাশ কর্তৃপক্ষ হতাশ হতে পারত, কারণ পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর জন্য একটি বড় আকর্ষণ।
সিএ এবং বিগ ব্যাশ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে পিসিবির সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এনে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের ছাড়পত্র দেওয়ার খবর আসার পর, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে সিএ তাদের সিদ্ধান্ত বদলানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল। তবে সিএ কতটা সফল হয়েছিল তা জানা যায়নি, তবে পিসিবির সিদ্ধান্ত বদলের পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের জন্য বিদেশি লিগে খেলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্রিকেট লিগ এবং বিপিএলসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি বড় ইতিবাচক ঘটনা হতে পারে, যা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান আরও দৃঢ় করতে সাহায্য করবে।


