লিবিয়া থেকে ৩০৯ বাংলাদেশি নাগরিকের নিরাপদ প্রত্যাবাসন

লিবিয়া থেকে ৩০৯ বাংলাদেশি নাগরিকের নিরাপদ প্রত্যাবাসন

লিবিয়ায় অনিয়মিতভাবে অবস্থান করা ৩০৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং ত্রিপোলিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায়। শুক্রবার সকালে ফ্লাই ওয়া ইন্টারন্যাশনালের একটি বিশেষ চার্টার্ড ফ্লাইটে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।

প্রত্যাবর্তনকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আইওএম মিলে সমন্বিতভাবে কাজ করেছে। সকাল ৯টায় দেশে পৌঁছানোর পর বিমানবন্দরে প্রত্যাবর্তনকারী ব্যক্তিদের গ্রহণ এবং সহায়তার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও আইওএম কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে যাওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে অনেক বাংলাদেশি মানব পাচারকারীদের মাধ্যমে অবৈধভাবে লিবিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন। এসব মানুষকে পরবর্তীতে লিবিয়ায় পাচারকারী চক্র ও সশস্ত্র গোষ্ঠী দ্বারা অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই শারীরিক ও মানসিকভাবে ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন।

আইওএম প্রত্যাবর্তনকারী প্রতিটি ব্যক্তিকে ভ্রমণ ভাতা, খাদ্য সামগ্রী এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যাবর্তনকারীদের তাদের অভিজ্ঞতা অন্যদের জানাতে এবং অনিয়মিত অভিবাসন ও মানব পাচারের বিপদ সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

প্রত্যাবর্তনের জন্য বিভিন্ন লিবিয়ান আটক কেন্দ্রে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনতে সরকার, বাংলাদেশ দূতাবাস, আইওএম এবং আন্তর্জাতিক অংশীদাররা সম্মিলিতভাবে কাজ করছে। বাংলাদেশ সরকার লিবিয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় বৃদ্ধি করতে কাজ করছে যাতে দেশের নাগরিকরা বিদেশে কর্মসংস্থানের নিরাপদ এবং আইনি পথ অনুসরণ করতে পারে।

এছাড়া, সরকারের পক্ষ থেকে লিবিয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পাচার প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আলোচনার মাধ্যমে আরও উন্নত সমন্বয়ের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ধরনের অভিবাসন চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি, বিদেশে কর্মসংস্থান সুরক্ষিত এবং বৈধ পথের সুযোগ তৈরির জন্য সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে আরও নিবিড় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, কর্মী এবং সাধারণ নাগরিকদের এই ধরনের মানব পাচারের বিপদ সম্পর্কে সচেতন করার লক্ষ্যে সরকারের প্রচেষ্টা বাড়ানোর প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

প্রত্যাবর্তনকারী ব্যক্তিদের সহযোগিতার পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তার জন্য আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ