ইংল্যান্ডের ইনিংসে ব্রুকের সেঞ্চুরির ঝলক, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২৩ রানে অলআউট

ইংল্যান্ডের ইনিংসে ব্রুকের সেঞ্চুরির ঝলক, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২৩ রানে অলআউট

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের জন্য একদম কঠিন পরিস্থিতি ছিল। দলের তিনটি উইকেট ৫ রানে হারানোর পরও, ইংল্যান্ড অধিনায়ক হ্যারি ব্রুক নিজের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরির মাধ্যমে দলকে এক লড়াইয়ের পরিস্থিতিতে নিয়ে যান।

ব্রুকের ১৩৫ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংসের কল্যাণে ইংল্যান্ড ৩৫.২ ওভারে ২২৩ রানে অলআউট হওয়ার আগে দলীয় সঙ্কট কিছুটা কাটিয়ে ওঠে। ব্রুকের ব্যাটে ১১ ছক্কা ও ৯ চার ছিল, যা তার ইনিংসকে করেছে অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন ও সশক্ত।

ইংল্যান্ডের ইনিংস শুরুর দিকে বোলারদের দাপটে দলের পরিস্থিতি শোচনীয় হয়ে পড়ে। ৫ রানে তিনটি উইকেট হারানোর পর ব্রুক দৃঢ়ভাবে মাঠে দাঁড়িয়ে তার ব্যাটিং দক্ষতা প্রদর্শন করেন। প্রথমদিকে, ব্রুকের ব্যাটিং ছিল বিশেষভাবে আক্রমণাত্মক, ৩৬ বলে তিনি ফিফটি পূর্ণ করেন। এরপর, ৮২ বলে সেঞ্চুরি করার পর, ব্রুক অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠেন।

ইনিংসের পঞ্চম উইকেটে ব্রুক ও পেসার লুক উড ৫৭ রানের একটি কার্যকরী জুটি গড়েন, যা ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ ১০ম উইকেট জুটির রেকর্ড হয়। এই অংশে উডের অবদান ছিল ৪ বলে ৫ রান, কিন্তু শেষ পর্যন্ত উড অপরাজিত থাকেন। ব্রুকের সেঞ্চুরি ও দলের শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়া এই ইনিংসটি বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

ব্রুকের ১১টি ছক্কা তার অসাধারণ ফর্মের নিদর্শন হিসেবে দেখা গেছে। বিশেষত, জ্যাকব ডাফির বলে ৩২তম ওভারে টানা তিনটি ছক্কা মারার পর সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ব্রুক। এরপর, ম্যাট হেনরির এক ওভারেও তিনটি ছক্কা মেরে নিজের শক্তি আরও প্রমাণ করেন। ব্রুকের এই ১১ ছক্কা নিউজিল্যান্ডে সফরকারী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, যা ২০১৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার মার্কাস স্টয়নিসের ১১ ছক্কার সাথে সমান। এর আগে, ২০১৯ সালে এই মাঠে শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরা ১৩টি ছক্কা মেরেছিলেন।

এছাড়া, ব্রুকের ১১ ছক্কা এক ইনিংসে ইংল্যান্ডের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ছক্কার তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। এউইন মরগানের এক ইনিংসে ১৭টি ছক্কার রেকর্ড এখনও অক্ষুণ্ণ।

ব্রুকের অসাধারণ ইনিংসের পরেও ইংল্যান্ডের বাকি ব্যাটসম্যানরা খুব একটা এগোতে পারেননি। দলের মধ্যে একমাত্র ব্রুক ছাড়া আরেকজন ব্যাটসম্যান, জেমি ওভারটন, দুই অঙ্কে পৌঁছাতে সক্ষম হন। তিনি ৪৬ রান করেন। এর বাইরে, অন্য কেউ কোনো উল্লেখযোগ্য রান করতে পারেননি। তৃতীয় সর্বোচ্চ রান আসে উডের ব্যাট থেকে, ৫ রান।

নিউজিল্যান্ডের বোলিং ছিল অতি কার্যকরী। পেসার জাকারি ফোকস সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নিয়ে দলের নেতৃত্ব দেন, এবং জ্যাকব ডাফি ৩ উইকেট তুলে নেন। ফোকস এবং ডাফির পাশাপাশি, ম্যাট হেনরি ও মিচেল স্যান্টনারও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, যদিও তারা উইকেট না পেলেও ইংল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের চাপের মধ্যে রেখেছিলেন।

এই ম্যাচে ব্রুকের সেঞ্চুরি ইংল্যান্ডের জন্য আশার সঞ্চারক হলেও দলের ব্যাটিং লাইন-আপের গভীরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও ব্রুকের একক পারফরম্যান্স ছিল নজরকাড়া, তবে ইংল্যান্ডের অন্যান্য ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার কারণে দলের সংগ্রহ সীমিত ছিল।

নিউজিল্যান্ডের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জয় হতে পারে এই ম্যাচটি যদি তারা ব্রুকের ব্যাটিং বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠে। তবে, ইংল্যান্ডের বোলিং বিভাগ যদি তাদের ব্যাটসম্যানদের রান করা রিভার্স করতে সক্ষম হয়, তবে পরবর্তী ম্যাচে এটি আরও একটি নাটকীয় টুর্নামেন্টের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

এই ম্যাচটি অবশ্যই একাধিক প্রেক্ষাপটে ইংল্যান্ডের খেলা ও তার ভবিষ্যৎ ক্রিকেট সম্পর্কিত আলোচনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে থাকবে।

খেলাধূলা শীর্ষ সংবাদ