জোনায়েদ সাকি: নির্বাচন ছাড়া সংস্কার প্রক্রিয়া সফল হবে না

জোনায়েদ সাকি: নির্বাচন ছাড়া সংস্কার প্রক্রিয়া সফল হবে না

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, “নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়িত হবে না।” তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য যেকোনো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে সংসদীয় নির্বাচন ও গণভোটের মাধ্যমে, যার মাধ্যমে দেশব্যাপী বাস্তবায়নযোগ্য মৌলিক পরিবর্তন সম্ভব হবে।

রোববার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাকি বলেন, “বিপ্লবের পরও সংসদ এবং সংবিধানকে বৈধতা দেওয়ার জন্য একটি নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির দরকার হয়। তবেই রাষ্ট্র সংস্কারের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।”

তিনি আরও বলেন, গণভোটের মাধ্যমে মৌলিক সংস্কারের ক্ষমতা আগামী সংসদের কাছে অর্পণ করার বিষয়ে একমত হয়েছেন তারা। সাকি মন্তব্য করেন, “যদি এই কাজ আমরা সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারি, তবে বাংলাদেশে একটি নতুন রাজনৈতিক যাত্রার সূচনা হতে পারে। তবে নির্বাচন প্রলম্বিত বা বাধাগ্রস্ত হলে তা কারও জন্যই মঙ্গল বয়ে আনবে না।”

জোনায়েদ সাকি আরও জানান, ছাত্র সমাজের সমর্থনে তারা রাষ্ট্র সংস্কারের ৩১ দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করেছেন। তিনি বলেন, “এই ৩১ দফা কর্মসূচি বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ গ্রহণ করেছে, এবং এই গ্রহণযোগ্যতার ফলে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের জন্য আওয়াজ উঠেছে।” সাকি উল্লেখ করেন, “এটি কোনো হঠাৎ সিদ্ধান্ত নয়; দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক সংগ্রামের ভেতর থেকে এই ধারণা তৈরি হয়েছে, যা ছাত্র সমাজের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে।”

জোনায়েদ সাকি কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকেই আমাদের রাজনৈতিক বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। সেই সময় থেকে নুরুল হক নুর, রাশেদ, মামুন, ফারুকসহ আরও অনেকের সঙ্গে পরিচিত হতে শুরু করি। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরপরই আন্দোলনকারীদের ওপর এক ধরনের অত্যাচার নেমে আসে, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলা ও তার পরবর্তী পরিস্থিতি আমাদের সংহতি সৃষ্টি করেছে।”

সাকি আরও বলেন, ছাত্র সমাজ তাদের দাবির প্রতি দৃঢ় মনোভাব দেখাচ্ছে এবং রাষ্ট্রব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য তারা প্রস্তুত। তিনি বলেন, “যেহেতু ছাত্র সমাজ এটি গ্রহণ করেছে, সেহেতু নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের আওয়াজ উঠেছে।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এটি এমন নয় যে কোনো একজন বললেন আর সেটি সবার মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে; এটি রাজনৈতিক সংগ্রামের মধ্যে তৈরি হওয়া একটি ঐক্য।”

জোনায়েদ সাকি বলেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্বার্থ এখন বিচার সংস্কার এবং নির্বাচন। বিচার ছাড়া কোনো রাষ্ট্র তার স্থিতি ধরে রাখতে পারে না, এবং সংস্কার বাংলাদেশের রক্তের অঙ্গীকার। নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য এই সংস্কার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে।”

তিনি আরও যোগ করেন, “এই মুহূর্তে আমাদের একসঙ্গে থাকতে হবে এবং বাংলাদেশের স্বার্থে কাজ করতে হবে। বিচার ব্যবস্থা এবং নির্বাচন প্রক্রিয়া পুনর্গঠন না করলে দেশ কার্যকরভাবে চলতে পারবে না।”

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, নির্বাচন এবং রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য গণভোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ছাত্র সমাজ ও নাগরিক সমাজের সমর্থন নিয়ে বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংস্কারের প্রক্রিয়া সফলভাবে এগিয়ে যাবে।

রাজনীতি