ডিএসই’তে বাজার মূলধন বৃদ্ধি, তবে কমেছে দৈনিক গড় লেনদেন

ডিএসই’তে বাজার মূলধন বৃদ্ধি, তবে কমেছে দৈনিক গড় লেনদেন

গত সপ্তাহে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) একটি অদ্ভুত পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে। যেখানে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমেছে, সত্ত্বেও বাজার মূলধন বেড়েছে। এই সময়ে ডিএসই’র বাজার মূলধন ৬ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৭ লাখ ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। তবে, একই সময়ে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ কমেছে প্রায় ১৮ শতাংশ।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে ১৫৭টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার দাম বৃদ্ধি পেলেও, ২০৩টি প্রতিষ্ঠান শেয়ার দর কমিয়েছে। অর্থাৎ, বাজারে মোট ৫২ শতাংশ প্রতিষ্ঠান দরপতনের সম্মুখীন হয়েছে। তবে, এই দরপতনের পরও সপ্তাহের শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন ৬ হাজার ৫৮ কোটি টাকা বা দশমিক ৮৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাজার মূলধনের এই বৃদ্ধি ও মূল্য সূচকের ইতিবাচক প্রবণতা বাজারের জন্য আশাব্যঞ্জক বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। ডিএসই’র প্রধান মূল্য সূচক, ডিএসইএক্স, গত সপ্তাহে ৩০ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা দশমিক ৬০ শতাংশ বেড়েছে। পূর্ববর্তী সপ্তাহে এই সূচকটি ১৬৪ দশমিক ৩০ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ১১ শতাংশ কমে গিয়েছিল।

এছাড়া, ডিএসই-৩০ সূচকও বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানির সূচক ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে বেড়েছে ২ দশমিক ২৬ পয়েন্ট বা দশমিক ২১ শতাংশ।

যদিও বাজার মূলধন ও মূল্য সূচকের ইতিবাচক প্রবণতা বজায় রয়েছে, তবুও গত সপ্তাহে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ কমে এসেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন হয়েছে ৪২৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ৯৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বা ১৮ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ কম। আগের সপ্তাহে গড় লেনদেন ছিল ৫২২ কোটি ২২ লাখ টাকা।

এটি বাজারের সামগ্রিক অবস্থাকে কিছুটা দুর্বলতা হিসেবে দেখা যাচ্ছে, যা পরবর্তী সময়ে বাজারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করতে পারে।

গত সপ্তাহে ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন কোম্পানির শেয়ার। প্রতিদিন গড়ে ২১ কোটি ৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ ছিল। দ্বিতীয় স্থানে ছিল ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং, যার শেয়ার প্রতিদিন গড়ে ১৯ কোটি ৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে।

তৃতীয় স্থানে ছিল সামিট এলায়েন্স পোর্ট, যার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এছাড়া, লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে: স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, খন ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, রবি, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এবং সোনালী পেপার

সামগ্রিকভাবে, শেয়ারবাজারের পারফরম্যান্স কিছুটা ইতিবাচক হলেও, লেনদেনের গতির হ্রাস এবং অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর কমে যাওয়া কিছুটা চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি সামনে বাজারের স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধির জন্য একটি সতর্ক সংকেত হতে পারে।

এখন দেখতে হবে, বাজারের এই ওঠানামা ও গতি কমে যাওয়া কীভাবে ভবিষ্যতে বিনিয়োগকারীদের মনোভাব এবং বাজারের সামগ্রিক গতিপথে প্রভাব ফেলে।

অর্থ বাণিজ্য শীর্ষ সংবাদ