রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শনিবার রাতে পাকিস্তানের যৌথ বাহিনীর জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ কমিটির চেয়ারম্যান (সিজেসিএসসি) জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জা, বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে উভয়পক্ষ দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং সহযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এসময় বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্কের উন্নয়নে উভয়পক্ষের মাঝে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার সম্ভাবনা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
বৈঠকে জেনারেল মির্জা বলেন, “পাকিস্তান বাংলাদেশের সঙ্গে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্কের বন্ধন আরও শক্তিশালী করতে আগ্রহী।” তিনি আরও বলেন, “দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, যোগাযোগ এবং বিনিয়োগের সুযোগ এবং সম্ভাবনা ব্যাপক।”
জেনারেল মির্জা করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে নৌপথে যোগাযোগ শুরু হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেন এবং আশা প্রকাশ করেন যে, ঢাকা-করাচি আকাশপথ শিগগিরই চালু হবে। তিনি জানান, এই আকাশপথের প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন হয়ে গেছে এবং আগামী কয়েক মাসের মধ্যে এটি চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উভয়পক্ষই বৈশ্বিক পর্যায়ে ভুয়া খবর, বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, “বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর এবং বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, যা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে ব্যবহার করা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “এই বিপদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে একটি সমন্বিত বৈশ্বিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন।”
বৈঠকে, উভয়পক্ষ মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপে চলমান উত্তেজনা প্রশমনের প্রয়োজনীয়তার ওপরও গুরুত্ব দেন। বর্তমান আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়েও আলোচনা হয়।
সাক্ষাৎকালে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, সিনিয়র সচিব ও এসডিজি সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ এবং ঢাকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইমরান হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
এই সাক্ষাৎ এবং আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান নিজেদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিশ্চিত করেছে। বিশেষ করে বাণিজ্য এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সম্পর্ক আরও গভীর করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।


