ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিবের মন্তব্য: চেয়ারম্যানদের তৃণমূলে নেতৃত্ব দিতে হবে

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিবের মন্তব্য: চেয়ারম্যানদের তৃণমূলে নেতৃত্ব দিতে হবে

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ বলেছেন, ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় জনমতের প্রতিফলন ঘটাতে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের তৃণমূলে নেতৃত্ব দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় চেয়ারম্যানরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সেবা সাধারণ জনগণের কাছে পৌঁছায়।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকালে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে চেয়ারম্যান পরিষদের বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যান পরিষদের সভাপতি ও বরিশাল সদরের জাগুয়া ইউনিয়ন পরিষদে হাতপাখা প্রতিকে নির্বাচিত চেয়ারম্যান মুফতি হেদায়েতুল্লাহ আজাদী, যুগ্ম মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি মোস্তফা কামাল, সহ দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট বরকতুল্লাহ লতিফ, এবং জাতীয় উলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সেক্রেটারি মুফতি রেজাউল করীম আবরারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমদ তার বক্তব্যে বলেন, তৃণমূলের জনগণ যদি রাজনৈতিকভাবে সচেতন হয় এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে, তবে কোনো শক্তিই বাংলাদেশকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলতে পারবে না। তিনি উল্লেখ করেন, ইউনিয়ন পরিষদ দেশের সর্বপ্রান্তিক স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা, যেখানে জনগণের সঙ্গে রাষ্ট্রের সরাসরি সম্পর্ক স্থাপন করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা নাগরিকদের বিভিন্ন অধিকার, দেনাপাওনা, ভোটাধিকার এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের সঠিক সংরক্ষণের বিষয়ে সচেতন করতে পারেন।

তিনি বলেন, “যদি চেয়ারম্যানরা তৃণমূলের জনগণকে যথাযথভাবে সচেতন করতে পারেন, তবে দেশটির ভবিষ্যত নিয়ে কেউ তামাশা করতে পারবে না। আগামী নির্বাচনে চেয়ারম্যান পরিষদকে আরও গুরু দায়িত্ব বহন করতে হবে।”

মাওলানা ইউনুস আহমদ আরও বলেন, গত জুলাই মাসে ছাত্রদের আন্দোলন ও রক্তদান সত্ত্বেও সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি এখনও নির্ধারিত হয়নি। তিনি একে জনগণের জন্য হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেন এবং এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “যে সংস্কারের জন্য গত জুলাইয়ে ছাত্ররা জীবন দিয়েছে, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এটি জনগণের মাঝে হতাশার সৃষ্টি করেছে।”

মাওলানা ইউনুস আহমদ নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা হাতপাখা প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের দায়িত্ব আরও বেশি। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ইসলামের সুমহান আদর্শ বাস্তবায়নও তাদের কর্তব্য। তিনি তাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে এবং আল্লাহর রহমত কামনা করতে পরামর্শ দেন। এছাড়া, তিনি হজরত উমর (রাঃ)-এর তাকওয়া ও সততার উদাহরণ দিয়ে কাজ পরিচালনার আহ্বান জানান।

এই সভায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান পরিষদের নেতৃবৃন্দ তাদের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন এবং আগামী নির্বাচনে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য প্রস্তুত থাকার বিষয়ে সম্মত হন।

বৈঠকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তার নেতাকর্মীদের তৃণমূলে আরও সক্রিয় হতে এবং জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য আহ্বান জানায়।

এছাড়া, চেয়ারম্যান পরিষদ ভবিষ্যতে স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের অধিকার ও সেবা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করবে বলে জানানো হয়।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমদের বক্তব্য, বিশেষ করে তৃণমূল নেতৃত্বের গুরুত্ব এবং নির্বাচনী সংস্কারের বিষয়টি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। দলের নেতারা তাদের কর্মসূচিতে স্থানীয় সরকারের বিকাশ, নাগরিক অধিকার এবং ইসলামের সুমহান আদর্শ বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছেন।

এখন দেখার বিষয়, এই আহ্বান কতটা বাস্তবায়ন হতে পারে এবং আসন্ন নির্বাচনে চেয়ারম্যান পরিষদ কীভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে।

রাজনীতি