পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত সব জাতি-গোষ্ঠীর মধ্যে শান্তি, সম্প্রীতি এবং সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি নতুন সামাজিক সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছে। ‘সিএইচটি সম্প্রীতি জোট’ নামে এই সংগঠনটি পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জাতিসত্তার প্রতিনিধিত্ব করবে এবং তাদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করবে।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরাম খাঁ হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই অনুষ্ঠানে সংগঠনের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার থোয়াইচিং মং শাক সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মেহেদী হাসান, নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন, এবং স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টির আহ্বায়ক জিয়াউল হক।
সংগঠনটির মূল লক্ষ্য হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৪টি জাতিসত্তার সম্মিলিত প্রতিনিধিত্ব করা এবং তাদের সাংবিধানিক অধিকার সুরক্ষিত করা। এই জাতিসত্তাগুলোর মধ্যে খুমি, শাক, লুসাই, পাংখোয়া, বম, খিয়াং, ম্রো, গুর্খা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, মারমা, চাকমা এবং বাঙালি রয়েছে। সংগঠনটির নেতা গোষ্ঠীভিত্তিক বিভাজন নয়, বরং মানবতার ভিত্তিতে সকল জনগণের ঐক্য ও শান্তির পক্ষে কথা বলেছেন।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ইঞ্জিনিয়ার থোয়াইচিং মং শাক আহ্বায়ক, ইখতিয়ার ইমন সদস্য সচিব, এবং পাইশিখই মার্মা মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন। কমিটির অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন শাহীন আলম, তন্ময় চৌধুরী, নিলা মং শাক প্রমুখ।
সংগঠনটির লক্ষ্যকে সামনে রেখে, প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা তারেক রহমান। তিনি বলেন, “দেশের সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে সম্প্রীতি রক্ষা আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। আমি বিশ্বাস করি, সিএইচটি সম্প্রীতি জোট যে ঐক্য সৃষ্টি করেছে, তা পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি ও সম্প্রীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।”
সভাপতির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার থোয়াইচিং মং শাক বলেন, “আমরা কোনো বিভাজনের রাজনীতিতে বিশ্বাসী নই। আমাদের লক্ষ্য হলো পার্বত্য চট্টগ্রামের সব জনগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্য, শান্তি ও উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া। বিভাজন নয়, মানবতার ভিত্তিতে ভ্রাতৃত্বই হবে আমাদের মূল শক্তি।”
এই নতুন সংগঠনটি পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাদের উদ্যোগ এবং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা দেশের এই বিশেষ অঞ্চলের মানুষের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে।


