চোরাই ও অবৈধ মোবাইল নিয়ন্ত্রণে এনইআইআর চালু করছে বিটিআরসি অর্থনীতি ডেস্ক

চোরাই ও অবৈধ মোবাইল নিয়ন্ত্রণে এনইআইআর চালু করছে বিটিআরসি অর্থনীতি ডেস্ক

অর্থনীতি ডেস্ক

চোরাই ও অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেট নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ‘ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার’ (এনইআইআর) সিস্টেম চালুর ঘোষণা দিয়েছে। বুধবার (২৯ অক্টোবর) সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বিটিআরসির বোর্ড রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।বিটিআরসি চেয়ারম্যান এমদাদ উল বারী বলেন, এনইআইআর চালুর মাধ্যমে দেশের নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত প্রতিটি মোবাইল হ্যান্ডসেটের নিবন্ধন সম্পন্ন হবে। ফলে সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে কোনো হ্যান্ডসেট বৈধ নাকি অবৈধ। তিনি বলেন, “এই দিনের জন্য আমরা দীর্ঘদিন অপেক্ষা করেছি। এনইআইআর চালুর মাধ্যমে আমরা অবৈধ ফোন বাজারকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব।”

চেয়ারম্যান জানান, বর্তমানে দেশে ব্যবহৃত প্রায় ৩৭ থেকে ৩৮ শতাংশ হ্যান্ডসেট এখনও নন-স্মার্ট বা সাধারণ ধরণের। এই পরিস্থিতিতে ডিজিটাল সেবার সম্প্রসারণে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হ্যান্ডসেটের ব্যবহার বাড়ানো এবং বৈধ বাজারকে সুরক্ষিত রাখতে এনইআইআর উদ্যোগটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি আরও বলেন, ২০১৭ সালের গাইডলাইনের ভিত্তিতে ২০১৮ সাল থেকে দেশে মোবাইল উৎপাদন শুরু হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ১৮টি কোম্পানি স্থানীয়ভাবে ফোন তৈরি করছে। স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও বাজারে চোরাই ও রিফারবিশড সেট প্রবেশ করায় দাম প্রতিযোগিতামূলকভাবে কমানো যাচ্ছে না। নতুন সিস্টেমটি অবৈধ হ্যান্ডসেট শনাক্তে সহায়ক হবে এবং দেশীয় নির্মাতাদের সুষ্ঠু প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখবে বলে জানান তিনি।

নিরাপত্তার প্রসঙ্গে এমদাদ উল বারী বলেন, এনইআইআর চালুর ফলে মোবাইল ফোন ও সিম কার্ড একসঙ্গে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। অর্থাৎ, নির্দিষ্ট ফোনে নির্দিষ্ট সিমই ব্যবহারযোগ্য হবে। অন্য কোনো সিম ব্যবহার করতে চাইলে সেটি পুনরায় নিবন্ধন করতে হবে। এতে ফোন চুরি বা অপরাধে ব্যবহৃত মোবাইল ট্র্যাকিং আরও সহজ হবে। প্রয়োজনে নেটওয়ার্ক থেকেই কোনো নির্দিষ্ট ফোন বন্ধ করার সুযোগ থাকবে বলেও তিনি জানান।

এছাড়া তিনি বলেন, “২০১৬-২০১৭ সালে সিম রেজিস্ট্রেশন ও বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের পরও কিছু অনিয়ম থেকে গিয়েছিল। বর্তমানে আমরা তা আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করছি।” তিনি জানান, এখন থেকে একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) বিপরীতে সর্বোচ্চ ১০টি সিম সক্রিয় রাখা যাবে। আগামী ১ নভেম্বর থেকেই মোবাইল অপারেটররা অতিরিক্ত সিম নিষ্ক্রিয় করবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে কোনো এনআইডির নামে ১০টির বেশি সিম সক্রিয় থাকবে না।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, ভবিষ্যতে প্রয়োজনে এনআইডি-প্রতি সিম সংখ্যা আরও কমানো হতে পারে, তবে সাধারণ গ্রাহকের যেন এতে কোনো ভোগান্তি না হয় তা নিশ্চিত করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব উপস্থিত ছিলেন।

এনইআইআর সিস্টেম চালুর মাধ্যমে বিটিআরসি আশা করছে, দেশের বৈধ মোবাইল বাজারে স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা এবং ভোক্তা সুরক্ষা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে।

অর্থ বাণিজ্য