সালমান শাহের মৃত্যু রহস্য: স্ত্রী সামিরার সাক্ষাৎকার, মিথ্যা অভিযোগ ও হত্যা মামলা

সালমান শাহের মৃত্যু রহস্য: স্ত্রী সামিরার সাক্ষাৎকার, মিথ্যা অভিযোগ ও হত্যা মামলা

ঢাকা ডেস্ক:

বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির অমর নায়ক সালমান শাহের মৃত্যুর রহস্য আজও ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সালমান শাহের মৃত্যু ঘটে, যা নিয়ে এখনও নানা প্রশ্ন উঠছে। বেশ কিছু বছর ধরে সালমানের মা, নীলা চৌধুরী তাঁর ছেলের মৃত্যু ঘটনাকে স্বাভাবিক আত্মহত্যা বলে মেনে নিতে পারছেন না। তিনি দাবি করেছেন যে সালমান শাহকে পরিকল্পিতভাবে ‘হত্যা’ করা হয়েছে। এই ঘটনায় মামলার এক নম্বর আসামি হিসেবে সালমানের স্ত্রী সামিরার নাম উঠে এসেছে।

এদিকে, সামিরা সালমান শাহের মৃত্যুর পর খুব বেশি গণমাধ্যমের মুখোমুখি হননি। তবে সম্প্রতি, সালমান শাহের জন্মদিন উপলক্ষে তিনি কিছু অজানা কথা জানিয়েছেন, যা বেশ চাঞ্চল্যকর। সামিরা জানান, সালমান শাহ বেঁচে থাকতে নিজের জন্মদিন কখনোই বড় করে উদযাপন করতেন না, তবে তাঁর জন্মদিনে অবশ্যই কিছু বিশেষ আয়োজন করতেন। সামিরা বলেন, “ইমন (সালমান শাহের ডাক নাম) সবসময় অন্যদের কথা ভাবতেন, নিজে কখনো কোনো আয়োজন করতেন না। আমার জন্মদিনে একবার আমাকে ১১ তলা বিল্ডিং থেকে চোখ বেঁধে নামানো হয়, তারপর উপহার হিসেবে একটি লাল গাড়ি পেয়েছিলাম।”


সামিরা তাঁর সংসার জীবনকে সুখী হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “আমরা একে অপরকে অনেক ভালোবাসতাম। মাঝে মাঝে মনোমালিন্য হলেও ইমন তা ভালোবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিত।”সামিরা জানিয়েছেন, সালমানের মায়ের সাথে তাঁর সম্পর্ক বিয়ের পর খারাপ হয়ে যায়। তিনি বলেন, “বিয়ের আগে সালমানের মা আমাকে খুব পছন্দ করতেন, কিন্তু বিয়ের পর যখন জানতে পারেন আমার পরিবার এই বিয়েতে সহমত ছিল না, তখন থেকে তিনি আমাকে অপছন্দ করতে শুরু করেন।”


সামিরা আরও বলেন, “আত্মহত্যার মতো কোনো কারণ ছিল না। আমরা শুধু একটু কথা কাটাকাটি করেছিলাম। এরপর ইমন রুমে চলে যায় এবং দরজা বন্ধ করে দেয়। আমি তখন অন্য রুমে ছিলাম, এরপর কিছুক্ষণ পর চিৎকার শুনে সবাই রুমে গিয়ে দেখতে পাই, ইমন ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল।”

তিনি আরও বলেন, “এমন ঘটনা আগে কয়েকবার ঘটেছিল, কিন্তু তখনও আমি ওকে ফেরাতে পারেছিলাম। ইমন মেন্টালি সুইসাইডাল ছিল। আমি জানি, এর আগে সে তিনবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল।”সামিরা দাবি করেন, সালমান শাহের মৃত্যুর পর তাকে হাসপাতাল বা সিলেটে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, “ওর মরদেহ সিলেট নিয়ে যাওয়ার পর আমাকে ওখানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। ইমন মারা যাওয়ার দিনই আমি বাসা থেকে বের হয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম।”

সামিরা আরো বলেন, সালমানের মা নীলা চৌধুরী যে অভিযোগ করেছেন, “আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের সাথে আমার সম্পর্ক ছিল”, তা পুরোপুরি মিথ্যা। সামিরা দাবি করেন, “আমি আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে ঠিকমতো চিনতাম না, সে শুধু ইমনের পরিচিত ছিল।”

এছাড়া, মামলার প্রেক্ষাপটে আদালত সম্প্রতি সালমান শাহের মৃত্যুর ২৯ বছর পর একটি হত্যা মামলার আদেশ দিয়েছেন। রমনা থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আর মামলার তদন্ত চলবে।

তবে, সালমান শাহের মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে কিনা, তা এখনও অধরা। তার মৃত্যু এখনো অনেকের কাছে রহস্য এবং তা নিয়ে নানা আলোচনা ও বিতর্ক চলছে।

বিনোদন