শিক্ষা ডেস্ক
দেশব্যাপী স্কুল শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানচর্চায় উৎসাহিত করতে বিকাশ ও বিজ্ঞানচিন্তার যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠিত বিজ্ঞান উৎসবের আরও দুটি আঞ্চলিক পর্ব শেষ হয়েছে সিলেট ও খুলনায়। এর মাধ্যমে এবারের বিজ্ঞান উৎসবের সব আঞ্চলিক পর্বের কার্যক্রম সম্পন্ন হলো।
ঢাকা, রংপুর, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও বরিশালে সফলভাবে আয়োজনের পর সিলেট ও খুলনায় আয়োজিত এই দুটি পর্বে ৫২টি স্কুলের প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের উদ্ভাবনী ও গবেষণাধর্মী প্রকল্প প্রদর্শনের পাশাপাশি কুইজ প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করে। পুরো আয়োজনটি উৎসবমুখর পরিবেশে সম্পন্ন হয়।
সিলেটের স্কলার্সহোম মেজরটিলা কলেজ এবং খুলনার সেন্ট জোসেফস উচ্চ বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই দুই পর্বে শিক্ষার্থীরা মোট ৩২টি বিজ্ঞান প্রকল্প প্রদর্শন করে। এসব প্রকল্পের মধ্যে উদ্ভাবনী চিন্তা ও বাস্তব প্রয়োগযোগ্যতার ভিত্তিতে সেরা ১৪টি প্রকল্পকে পুরস্কৃত করা হয়। পাশাপাশি, কুইজ প্রতিযোগিতায় দুই বিভাগে মোট ৪২ জন শিক্ষার্থী বিজয়ী হন এবং তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
সিলেটের উৎসবে উপস্থিত ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপ-উপাচার্য ড. মো. সাজেদুল করিম, স্কলার্সহোম মেজরটিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফয়জুল হক, শাবিপ্রবির রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান খান, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. ফরহাদ রাব্বি এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ড. মো. জাকির হোসেন।
অন্যদিকে, খুলনা বিভাগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নাজমুল আলম, সেন্ট জোসেফস স্কুলের প্রধান শিক্ষক আলফ্রেড রনজিৎ মন্ডল এবং বিজ্ঞানচিন্তার নির্বাহী সম্পাদক আবুল বাসার। দুই বিভাগেই বিকাশের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ও রেগুলেটরি অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান হুমায়ূন কবীর উপস্থিত থেকে শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন।
উৎসবের অংশ হিসেবে ছিল বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক প্রদর্শনী ও স্টল, বিজ্ঞাননির্ভর জাদুর প্রদর্শনী, বিজ্ঞান বক্তাদের বক্তব্য, লেখক, গণিতবিদ, উদ্ভিদবিদ ও চিকিৎসকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মুক্ত আলোচনা এবং সংগীতানুষ্ঠান। এসব কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান বিষয়ে আগ্রহ ও কৌতূহল বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
বিজ্ঞানচিন্তা ও বিকাশের এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের স্কুল শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী চিন্তা ও বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানকে উত্সাহিত করা। আয়োজকরা জানান, এ ধরনের উৎসব শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে বিজ্ঞান শেখার সুযোগ করে দেয়, যা ভবিষ্যতে তাদের গবেষণামুখী শিক্ষা ও উদ্ভাবনী সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
আঞ্চলিক পর্যায়ের পর্ব শেষ হওয়ার পর আগামী ৩১ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে এবারের চূড়ান্ত জাতীয় পর্ব। সেখানে আঞ্চলিক পর্বের প্রকল্প ও কুইজ বিজয়ী শিক্ষার্থীরা অংশ নেবেন। চূড়ান্ত পর্বে সারা দেশ থেকে নির্বাচিত সেরা প্রকল্প ও কুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হবে।
বিজ্ঞানচিন্তা ও বিকাশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জাতীয় পর্যায়ের এই আয়োজনের মাধ্যমে দেশের বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষার্থীদের নেটওয়ার্ক তৈরি এবং তাদের উদ্ভাবনী ধারণাগুলোকে বাস্তবায়নের পথে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করা হবে।


