আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ছয় বছর পর আবারও মুখোমুখি হতে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। দক্ষিণ কোরিয়ার বুসান নগরীতে অনুষ্ঠিতব্য এই শীর্ষ বৈঠকে দুই নেতার উদ্দেশ্য হলো চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ, প্রযুক্তি ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজসম্পদ নিয়ে সমঝোতা খোঁজা। ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে এটি তাদের প্রথম বৈঠক হতে চলেছে, যা বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতি এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে, ট্রাম্প ও শি এই বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন, যার মধ্যে বিশেষ গুরুত্ব পাবে বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং ‘রেয়ার আর্থ মিনারেলস’ (মুলায়েম খনিজসম্পদ)। এই খনিজগুলো স্মার্টফোন, বৈদ্যুতিক গাড়ি, যুদ্ধবিমান এবং ড্রোন তৈরিতে অপরিহার্য। চীন বর্তমানে বিশ্ববাজারে এসব খনিজের প্রধান সরবরাহকারী, এবং যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এগুলোর সহজ প্রবেশাধিকার পাওয়া এখন অন্যতম অগ্রাধিকার।
এদিকে, চীন সম্প্রতি ওয়াশিংটনের নিষেধাজ্ঞার জবাবে কিছু চীনা কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং তাদের খনিজ রপ্তানিতে নতুন সীমাবদ্ধতা দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, ট্রাম্প শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে এসব খনিজের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সুবিধাজনক চুক্তি অর্জনের চেষ্টা করবেন।
এছাড়া, ট্রাম্প এই বৈঠকে চীনের টিকটক অ্যাপের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোনো কোম্পানির হাতে হস্তান্তর করার বিষয়ে একটি চূড়ান্ত চুক্তি চাইবেন। এর পাশাপাশি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কৃষকদের সুবিধা চিন্তা করে চীনকে সয়াবিন আমদানি পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানাবেন।
বৈঠকে বেইজিংও তাদের কিছু দাবি তুলবে। চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে উন্নত কম্পিউটার চিপে প্রবেশাধিকার সহজ করার, ফেন্টানিল-সম্পর্কিত শুল্ক প্রত্যাহার এবং বন্দর ফি সংশোধনের দাবি তুলবে।
এর আগে, ২০১৯ সালে জাপানের ওসাকায় অনুষ্ঠিত জি২০ সম্মেলনে ট্রাম্প ও শি একত্রিত হয়ে বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তখন শি জিনপিং কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৪০ বছরে দুই দেশের সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বলেছিলেন যে সংঘাতের চেয়ে সংলাপ ও সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ।
শি বলেছিলেন, “চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ এখন একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।” জবাবে, ট্রাম্প তখন আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক ইস্যুতে মতবিরোধ সংযতভাবে মোকাবিলা করা উচিত এবং যুক্তরাষ্ট্র চীনের পণ্যের ওপর নতুন কোনো শুল্ক আরোপ করবে না।
এই নতুন বৈঠকটি বর্তমান গ্লোবাল অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে, বিশেষ করে যখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর বেশ কিছু অমীমাংসিত ইস্যু রয়েছে।


