জাতীয় ডেস্ক
ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) নিষিদ্ধের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ একটি ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ, যেখানে সকল ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করেন। কিন্তু ইসকন সংগঠনের কিছু কর্মকাণ্ড দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে তারা অভিযোগ করেন। বক্তারা দাবি জানান, সংগঠনটির কার্যক্রম সরকারিভাবে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং সংগঠনটিকে দ্রুত নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক।
সমাবেশে আহলে হাদিস আন্দোলন বাংলাদেশের প্রকাশনা সম্পাদক অধ্যাপক মুহাম্মাদ আব্দুল লতীফ বলেন, “ইসকন নামের সংগঠনটি ধর্মীয় ছদ্মাবরণে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক বক্তব্য এবং কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। এটি দেশের শান্তি–শৃঙ্খলা ও ধর্মীয় সম্প্রীতির জন্য হুমকি হয়ে উঠছে।” তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, ইসকনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে।
বক্তারা আরও বলেন, উগ্র হিন্দুত্ববাদী বা ধর্মবিদ্বেষী কোনো সংগঠন বাংলাদেশের মাটিতে কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবে না। দেশে বিদ্যমান শান্তি ও সম্প্রীতি নষ্টের যেকোনো অপচেষ্টা প্রতিহত করা হবে। তারা অভিযোগ করেন, ইসকনের কিছু কার্যক্রম ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আড়ালে সাম্প্রদায়িক বিভাজন উসকে দিচ্ছে।
ঢাকা দক্ষিণের আহলে হাদিস আন্দোলনের সহসভাপতি কাজী হারুনূর রশীদ বলেন, “বাংলাদেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্র। এখানে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। কিন্তু ইসকনের কর্মকাণ্ড বারবার উসকানিমূলক আচরণের মাধ্যমে সেই সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে।” তিনি সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান, যাতে দেশের ঐক্য ও সামাজিক স্থিতি রক্ষায় এ ধরনের কার্যক্রম কঠোরভাবে দমন করা হয়।
সমাবেশে বক্তারা আরও জানান, সরকার যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেয়, তবে তারা সারাদেশে শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। সংগঠনের নেতাদের দাবি, ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখতে ও ভবিষ্যতে সাম্প্রদায়িক সংঘাত এড়াতে ইসকনের কার্যক্রম পর্যালোচনা জরুরি।
সমাবেশে চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত আহলে হাদিস আন্দোলনের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন। কর্মসূচির শেষ পর্যায়ে তারা শান্তিপূর্ণভাবে বায়তুল মোকাররম প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ধর্মীয় সংগঠনগুলোর কার্যক্রম নিয়ে প্রশাসন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজন হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।


