রাজনীতি ডেস্ক
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামের নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, বর্তমান নির্বাচনী পদ্ধতি দেশকে কলঙ্কিত করেছে এবং এই পদ্ধতি অব্যাহত থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন ও জনগণের সরকার গঠন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ২০১৪ সালে ভোটারবিহীন একতরফা নির্বাচন, ২০১৮ সালে দিনের ভোট রাতের ফলাফল, এবং ২০২৪ সালে “আমি-ডামি” নির্বাচনের উদাহরণ ইতিবাচক নয়।
শনিবার জাতীয় জাদুঘর গেইটে শাহবাগ পশ্চিম থানার উদ্যোগে আয়োজিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধনী সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন। মুজিবুর রহমান দাবি করেন, প্রজাতান্ত্রিক পদ্ধতি (প্রতিনিধি নির্বাচনের পদ্ধতি) বদলে পার্সোনাল রেপ্রেজেন্টেশন (পি.আর) পদ্ধতি অবলম্বন করলে ভোটের স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। পিআর পদ্ধতিতে ভোট চুরি, কেন্দ্র দখল বা মনোনয়ন বাণিজ্য বন্ধ হবে এবং জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সরকার গঠন করবে।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রকে মানুষের মৌলিক পাঁচটি অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তবে অতীতের কোনো সরকার এই অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। তিনি যুক্তি দেন, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির সৎ, যোগ্য, নৈতিক ও আদর্শিক নেতৃত্ব তৈরিতে কাজ করছে। উদাহরণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবির মনোনীত প্যানেলের বিজয় এবং পরবর্তীতে তাদের কার্যক্রম তুলে ধরা হয়।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নায়েবে আমির (ঢাকা-৮ আসনে সংসদ প্রার্থী) অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন বলেন, জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতার রাজনীতি নয়, জনগণের কল্যাণে নিবেদিত সংগঠন। তিনি বলেন, দল সামাজিক সেবামূলক কার্যক্রম নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য পরিচালনা করে এবং ক্ষমতায় গেলে এই ধারা অব্যাহত রাখা হবে।
ড. হেলাল উদ্দিন আরও উল্লেখ করেন, বিগত সময়ে যারা ক্ষমতায় ছিলেন তারা জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছেন, তবে জামায়াতের নেতাকর্মীরা দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে আপসহীন সংগ্রাম চালিয়েছে। তিনি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি বন্ধ করার জন্য গোপন ষড়যন্ত্রের বিষয়ও উল্লেখ করেন এবং বলেন, গণভোট ও ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাস্তবায়ন করতে হবে।
উদ্বোধনী সভায় শাহবাগ পশ্চিম থানা নায়েবে আমির ডা. মেসবাহ উদ্দিন সায়েমের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ডা. মো. আনোয়ারুল হক, ডা. হাফিজুর রহমান। সভার পরিচালনা করেন শাহবাগ পশ্চিম থানা সেক্রেটারি এম. লোকমান হোসেন, আর ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদপ্রার্থী অধ্যাপক আবদুল্লাহ আলফেসানী সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন। মেডিকেল ক্যাম্পে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা, পরামর্শ, প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
এছাড়া ড. হেলাল উদ্দিন ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লালমনিরহাটের কাজিউল ইসলামকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে ১ লাখ টাকার আর্থিক অনুদানের চেক প্রদান করেন। কাজিউলের ব্রেইন টিউমার অপারেশনের জন্য অর্থের প্রয়োজনের বিষয়টি জানার পর এই সহযোগিতা করা হয়।


