ঢাকায় রেল অবরোধ: টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেসসহ ৮ দফা দাবিতে আন্দোলন

ঢাকায় রেল অবরোধ: টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেসসহ ৮ দফা দাবিতে আন্দোলন

রাজধানী ডেস্ক:

রাজধানীর মগবাজার রেলগেট এলাকায় অনুমোদিত টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেস ট্রেন চালুসহ আট দফা দাবিতে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকাস্থ বৃহত্তর সিলেটবাসী। শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা ১২টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা অগ্নীবীণা এক্সপ্রেস ট্রেনকে আন্দোলনকারীরা প্রায় ১০ মিনিটের জন্য থামিয়ে রাখেন। পরে রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দাবিগুলো বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হলে তারা অবরোধ তুলে নিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করেন।

আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে সেলিম আহমেদ বলেন, “আজকের কর্মসূচি আমরা প্রতীকীভাবে পালন করেছি। রেল মন্ত্রণালয় থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে, আমাদের আট দফা দাবি দ্রুত বিবেচনা করা হবে।” তিনি আরও জানান, “যদি দাবিগুলোর বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে আগামী ১৮ নভেম্বর রেল মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হবে।”

আন্দোলনকারীরা জানান, তাদের ৮ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে—
১. ঢাকা–সিলেট রেলপথে অনুমোদিত ‘টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেস’ দ্রুত চালু করা।
২. সিলেট–ঢাকা রুটে দুটি এবং সিলেট–কক্সবাজার রুটে একটি স্পেশাল ট্রেন চালু করা।
৩. আখাউড়া–সিলেট রেলপথ সংস্কার ও ডাবল লাইন স্থাপন
৪. এই সেকশনে অন্তত দুটি লোকাল ট্রেন চালু করা।
৫. বন্ধ থাকা সব স্টেশন পুনরায় চালু করা।
৬. সিলেটের সব স্টেশনে আসনসংখ্যা বৃদ্ধি করা।
৭. কালনী ও পারাবত এক্সপ্রেসের আযমপুরের পর ঢাকামুখী সব স্টেশনে যাত্রাবিরতি প্রত্যাহার করা।
৮. ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় রোধে ত্রুটিমুক্ত ইঞ্জিন ব্যবহার এবং যাত্রী অনুপাতে অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা।

আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, সিলেট অঞ্চলের রেলসেবা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। আখাউড়া–সিলেট রেলপথ সংস্কারের কাজ ধীরগতিতে চলছে, ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ছে। এ অবস্থায় নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু ও বিদ্যমান ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এখন সময়ের দাবি বলে তারা মন্তব্য করেন।

কর্মসূচিতে ঢাকাস্থ সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সামাজিক ও আঞ্চলিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি আকবর হোসেন মঞ্জু, হবিগঞ্জ সমিতি ঢাকার সভাপতি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরফদার, সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম আহমেদ, জগন্নাথপুর সমিতির যুগ্ম সম্পাদক সায়েদুজ্জামান কামালী, সংগঠক আবু বকর সিদ্দিক, সুজন মিয়া, সাংবাদিক এমদাদুল হক ও জামিল আহমদ এবং ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ।

রেল মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সিলেট রেলপথে যাত্রীসেবা উন্নয়নের লক্ষ্যে ইতিমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। টাঙ্গুয়ার এক্সপ্রেস চালুর বিষয়টি নীতিগতভাবে অনুমোদিত, তবে তা বাস্তবায়নের আগে কিছু কারিগরি ও লজিস্টিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা প্রয়োজন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, রেল মন্ত্রণালয় আগামী সপ্তাহে সিলেট রেলপথ উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনায় বৈঠক করবে। সেই বৈঠকে আন্দোলনকারীদের উত্থাপিত কিছু দাবি আলোচনায় আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অবরোধ কর্মসূচির কারণে অল্প সময়ের জন্য ট্রেন চলাচল ব্যাহত হলেও পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অবরোধ চলাকালীন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি এবং ট্রেন চলাচল নিরাপদ রয়েছে।

রাজধানী