বিএমইউতে ক্যান্সার চিকিৎসায় এআই ও আধুনিক প্রযুক্তি বিস্তারের উদ্যোগ

বিএমইউতে ক্যান্সার চিকিৎসায় এআই ও আধুনিক প্রযুক্তি বিস্তারের উদ্যোগ

স্বাস্থ্য ডেস্ক

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) ক্যান্সার চিকিৎসায় আধুনিক প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার আরও বিস্তারের উদ্যোগ নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম জানিয়েছেন, ৩৮ কোটি টাকায় বিএমইউতে অত্যাধুনিক এআই-ভিত্তিক রেডিওথেরাপি মেশিন স্থাপন করা হবে। এছাড়া একটি পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার গবেষণা ও চিকিৎসা ইনস্টিটিউট স্থাপনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

শনিবার বিএমইউয়ের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগে অনুষ্ঠিত “প্রমাণভিত্তিক প্রিসিশন অনকোলজি: শিক্ষা, গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসের সমন্বয়” শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব তথ্য দেন। আলোচনায় প্রিসিশন অনকোলজির ভবিষ্যৎ, ক্যান্সার চিকিৎসায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার, আধুনিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা ও গবেষণাভিত্তিক চিকিৎসা মডেল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।

উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, “প্রিসিশন অনকোলজি ভবিষ্যতের চিকিৎসা ব্যবস্থা নির্ধারণ করবে। আমরা চাই বিএমইউ হোক সেই পরিবর্তনের নেতৃত্বদানকারী প্রতিষ্ঠান। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এটি একটি শিক্ষণীয় সময়, যেখানে প্রযুক্তি, গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল দক্ষতার সমন্বয় ঘটানো হবে।”

তিনি আরও জানান, অনকোলজি বিভাগে এআই-ভিত্তিক রেডিওথেরাপি মেশিন কেনার জন্য ৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে আরও বরাদ্দ দেওয়া হবে। পাশাপাশি, বিএমইউতে ক্যান্সার গবেষণা ও চিকিৎসা ইনস্টিটিউট স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, যা রোগীদের আন্তর্জাতিক মানের সেবা নিশ্চিত করবে এবং শিক্ষার্থীদের সর্বাধুনিক প্রশিক্ষণ প্রদানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

উপাচার্য আরও জানান, ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টার সিঙ্গাপুরের সঙ্গে শিগগিরই একটি সমঝোতা চুক্তি হবে, যা বাংলাদেশের ক্যান্সার গবেষণা ও চিকিৎসায় নতুন অধ্যায় উদ্বোধন করবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টার সিঙ্গাপুরের প্রফেসর ডা. হান চং তোহ বলেন, “বাংলাদেশ এখন প্রিসিশন অনকোলজির বাস্তব প্রয়োগে প্রবেশ করছে। গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি একত্রে ব্যবহৃত হলে দেশ ক্যান্সার চিকিৎসায় নতুন মানদণ্ড স্থাপন করতে পারবে। এআই ও জিনোমিক ডেটার সমন্বয় ভবিষ্যতের চিকিৎসাকে ব্যক্তি-নির্ভর করে তুলবে, যেখানে প্রতিটি রোগী পাবেন তার জন্য নির্দিষ্ট চিকিৎসা পরিকল্পনা।”

আলোচনায় বিএমইউয়ের ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হুসাইন সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন। এছাড়া অনকোলজি বিভাগের এমডি ও এফসিপিএস রেসিডেন্টরা নিজেদের কারিকুলাম এবং কেস প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন, যা শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য কার্যকর বাস্তবিক অভিজ্ঞতা সরবরাহ করে।

এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিএমইউ ক্যান্সার চিকিৎসায় প্রিসিশন অনকোলজি ও এআই প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের অনকোলজি চিকিৎসা ও গবেষণার মান আন্তর্জাতিক স্তরে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।

শীর্ষ সংবাদ স্বাস্থ্য