আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতের দেওয়া নৌকা উপহার নিয়ে আলোচনা–সমালোচনা

আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূতের দেওয়া নৌকা উপহার নিয়ে আলোচনা–সমালোচনা

অর্থনীতি ডেস্ক

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে নৌকা উপহার দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেল ওহাব সালদানি। গত শনিবার (১ নভেম্বর) রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত আলজেরিয়ার বিপ্লবের ৭১তম বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূতের পক্ষ থেকে এ উপহার প্রদান করা হয়। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে আলোচনা–সমালোচনা।

পরদিন রোববার এক ফেসবুক পোস্টে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বিষয়টি স্পষ্ট করে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন। তিনি জানান, আলজেরিয়ার জাতীয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মনোনয়নে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে তাঁকে মাঝিসহ পালতোলা নৌকার একটি প্রতিকৃতি উপহার দেওয়া হয়, যা তিনি কূটনৈতিক সৌজন্যবশত গ্রহণ করেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেছেন, “উপহারটিতে আলজেরিয়া দূতাবাসের নাম লেখা আছে। লক্ষ্যণীয়, এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীকের কোনো সম্পর্ক নেই।” তিনি আরও জানান, বর্তমানে তিনি ভাবছেন উপহারটি কীভাবে ব্যবস্থাপনা করবেন। তাঁর ভাষায়, “আমি এটি আলজেরিয় দূতাবাসে ফেরত পাঠাতে পারি, কিন্তু তা অসৌজন্যমূলক মনে হতে পারে। সরকারি তোশাখানায় জমা দিতে পারি, যদিও উপহারটি খুব মূল্যবান কিছু নয়। বিকল্পভাবে শৈলান প্রবীণ নিবাসে রাখতে পারি বা নিজে সংরক্ষণ করতে পারি।”

উপদেষ্টা আরও লেখেন, “এ বিষয়ে পাঠকের পরামর্শ পেলে উপকৃত হব।”

আলজেরিয়ার বিপ্লবের ৭১তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী ও সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল আলজেরিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের ঐতিহাসিক তাৎপর্য তুলে ধরা এবং বাংলাদেশ–আলজেরিয়া দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে মতবিনিময় করা।

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এ ধরনের অনুষ্ঠানে অতিথিদের সম্মানার্থে স্মারক উপহার দেওয়া কূটনৈতিক রীতির অংশ, যা সাধারণত প্রতীকী এবং সৌজন্যমূলক। তবে উপহার হিসেবে নৌকার প্রতিকৃতি দেওয়া এবং সেটিকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীকের সঙ্গে তুলনা করে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনা শুরু হলে বিষয়টি আলোচনায় আসে।

সরকারি প্রটোকল অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় পদাধিকারীরা বিদেশি রাষ্ট্র বা দূতাবাসের কাছ থেকে পাওয়া উপহার তোশাখানায় জমা দিতে পারেন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে সংরক্ষণ করতে পারেন। ফাওজুল কবির খানের ফেসবুক পোস্টের পর বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক ও কূটনৈতিক মহলে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ঘটনাটি ছোট হলেও বিদেশি উপহার গ্রহণ ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত নিয়মনীতি নিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা আবারও সামনে এনেছে।

জাতীয়