ভারতের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে পাকিস্তানে এক জেলে গ্রেফতার

ভারতের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে পাকিস্তানে এক জেলে গ্রেফতার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

অভিযোগে এক জেলেকে গ্রেফতার করেছে। শনিবার (১ নভেম্বর) ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির তথ্যমন্ত্রী আত্তা তারার ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তালাল চৌধুরী।

তথ্যমন্ত্রী জানান, অভিযুক্ত জেলে ইজাজ মোল্লাকে এ বছরের সেপ্টেম্বরে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ আটক করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায় এবং তাকে নির্দিষ্ট কিছু কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেয়। তারার বলেন, ইজাজকে ঘুষের প্রলোভন দেখানো হয়েছিল—কাজ সম্পন্ন করলে আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হবে, অন্যথায় তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তাকে কিছু নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হয়।

মন্ত্রী আরও জানান, ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইজাজকে নির্দেশ দিয়েছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও রেঞ্জার্স বাহিনীর পোশাক, স্থানীয় সিম কার্ড এবং ফোন বিলের নমুনা সংগ্রহ করতে। পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তার গতিবিধি নজরদারিতে রাখে এবং পুনরায় ভারতে ফেরার সময় তাকে আটক করে।

গ্রেফতারের পর ইজাজ মোল্লা তার অপরাধের স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে দাবি করেন তথ্যমন্ত্রী। সংবাদ সম্মেলনে তার স্বীকারোক্তিমূলক একটি ভিডিওও প্রকাশ করা হয়, যেখানে ইজাজ জানান, ভারতীয় এজেন্টরা সহযোগিতা না করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর হুমকি দিয়েছিল।

আত্তা তারার অভিযোগ করেন, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক ও কৌশলগত সাফল্যে ভারত উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে এবং এর ফলেই দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো পাকিস্তানের ভেতরে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নজরদারি শুরু করে যখন দেখা যায় ইজাজ পাকিস্তান সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও রেঞ্জার্সের ইউনিফর্ম কিনছে।”

গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে পাকিস্তানি সিম কার্ড, দেশীয় পণ্য, দিয়াশলাই, লাইটারসহ বিভিন্ন সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষের দাবি, এসব সামগ্রী ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করার পরিকল্পনা ছিল।

পাকিস্তান সরকার জানায়, ইজাজ মোল্লার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও গুপ্তচরবৃত্তি আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে রাখা হবে।

ঘটনাটি দুই দেশের মধ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম ও পারস্পরিক অবিশ্বাসের নতুন উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরনের ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ককে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলতে পারে, যা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।

 

আন্তর্জাতিক