আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং খুব ভালো করেই জানেন, যদি চীন তাইওয়ানে সামরিক আক্রমণ চালায়, তার পরিণতি কী হতে পারে। রবিবার সিবিএস নিউজের ‘৬০ মিনিটস’ অনুষ্ঠানে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তবে ট্রাম্প স্পষ্টভাবে জানাতে অস্বীকৃতি জানান যে, এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষায় সামরিক পদক্ষেপ নেবে কি না। তিনি বলেন, “যদি এমন কিছু ঘটে, তখন আপনি জানতে পারবেন। তিনিও (শি চিনপিং) তা বোঝেন।”
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় শি চিনপিংয়ের সঙ্গে ছয় বছরের মধ্যে প্রথম মুখোমুখি বৈঠক করেন ট্রাম্প। ওই বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি জানান, “তাইওয়ানের বিষয়টি আলোচনায় আসেনি।”
সিবিএসের সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, চীন যদি তাইওয়ানে সামরিক অভিযান শুরু করে, তবে তিনি কি মার্কিন বাহিনীকে হস্তক্ষেপের নির্দেশ দেবেন? জবাবে ট্রাম্প বলেন, “এমন কিছু ঘটলে আপনি জানবেন কী ঘটেছে, এবং তিনি (শি চিনপিং) জানেন এর ফল কী হতে পারে।”
ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি বলেন, “আমি আমার গোপন বিষয় প্রকাশ করতে পারি না। অন্য পক্ষ জানে আমি কী বোঝাতে চেয়েছি।”
মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, “চীনের প্রেসিডেন্ট শি এবং তার ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে বলেছেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন তারা কোনো পদক্ষেপ নেবেন না। কারণ, তারা জানতেন এর ফলাফল কী হতে পারে।”
চীন দীর্ঘদিন ধরে স্বশাসিত তাইওয়ানকে তাদের অবিচ্ছেদ্য ভূখণ্ড বলে দাবি করে আসছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের নীতি অনুযায়ী, ওয়াশিংটন আনুষ্ঠানিকভাবে বেইজিং সরকারকে স্বীকৃতি দিলেও তাইওয়ানের আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করে। এই নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই উত্তেজনাপূর্ণ।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প ও শির সাম্প্রতিক বৈঠকে তাইওয়ান ইস্যু এড়িয়ে যাওয়া বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির ইঙ্গিত বহন করে। বরং বৈঠকে উভয় পক্ষের মনোযোগ ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ প্রশমনের দিকে।
তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান দীর্ঘদিন ধরেই ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’র মধ্যে রয়েছে—যেখানে ওয়াশিংটন একদিকে বেইজিংকে চীনের বৈধ সরকার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, অন্যদিকে তাইওয়ানের নিরাপত্তা ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতি সমর্থন জানায়। এ দ্বৈত অবস্থানই ভবিষ্যতে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।


