স্বাস্থ্য ডেস্ক
ঢাকা, সোমবার, ৩ নভেম্বর ২০২৫:
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে ১ হাজার ১৪৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। একই সময়ে ডেঙ্গু থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়পত্র পেয়েছেন ১ হাজার ৪২ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি, অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে সোমবার (৩ নভেম্বর) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নতুন ভর্তি রোগীদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১৩২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৮ জন, ঢাকা বিভাগে (সিটি কর্পোরেশনের বাইরে) ২৬৬ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ২৮৪ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ১৪৫ জন, খুলনা বিভাগে ৫৯ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৬৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৭০ জন, রংপুর বিভাগে ১৯ জন এবং সিলেট বিভাগে ৯ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন মোট ৭২ হাজার ৮২২ জন। এর মধ্যে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২৮৮ জনের। অন্যদিকে এ সময়ের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের মধ্যে ছাড়পত্র পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৪৫২ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকলেও আক্রান্তের সংখ্যা এখনও উদ্বেগজনক। রাজধানী ঢাকায় আক্রান্তের হার সবচেয়ে বেশি, বিশেষ করে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায়।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মোট ১ লাখ ১ হাজার ২১৪ জন এবং ওই বছর এ রোগে মৃত্যু হয়েছিল ৫৭৫ জনের। এর আগের বছর ২০২৩ সালে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন, যা দেশের ইতিহাসে সর্বাধিক। সে বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছিল ১ হাজার ৭০৫ জনের।
চলতি বছরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বর্ষা মৌসুমে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও অক্টোবরের পর থেকে ধীরে ধীরে তা কমছে। তবে বিভিন্ন এলাকায় এখনও এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে পর্যাপ্ত উদ্যোগ না থাকায় সংক্রমণ অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এডিস নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এডিস মশার প্রজননস্থল ধ্বংসে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালু রাখলে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও কমানো সম্ভব। পাশাপাশি হাসপাতালগুলোতে প্রয়োজনীয় ওয়ার্ড ও চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় মাঠপর্যায়ে নজরদারি, আক্রান্তদের দ্রুত চিকিৎসা ও তথ্য ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে স্থানীয় সরকার সংস্থা ও নাগরিকদের সহযোগিতায় মশা নিধন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।


