খেলাধুলা ডেস্ক
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল দেশের ক্রিকেটের বিকেন্দ্রীকরণ ও সার্বিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, দেশের সব জেলা ও বিভাগের ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের একত্রে নিয়ে ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট কনফারেন্স’ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯ ও ১০ নভেম্বর ঢাকায়।
প্রথম মেয়াদে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিসিবির কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণে জোর দিচ্ছেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্রিকেটের উন্নয়ন তদারকিতে তিনি নিজে অংশ নিচ্ছেন নানা উদ্যোগে। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি পূর্বে বিসিবির আঞ্চলিক অফিস চালুর ঘোষণা দিয়েছিলেন। এবার সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের একত্রে এনে পারস্পরিক মতবিনিময় ও পরিকল্পনা নির্ধারণে এই কনফারেন্স আয়োজনের ঘোষণা দিলেন।
বিসিবির প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের ৬৪ জেলা ও আটটি বিভাগজুড়ে ক্রিকেটের বিস্তার ঘটেছে। এখন সময় এসেছে, জেলার ক্রিকেট সংগঠক, জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা, কোচ, নারী উদ্যোক্তা ও অন্যান্য সংশ্লিষ্টদের এক ছাদের নিচে এনে তাদের মতামত শোনার। তিনি বলেন, “আমরা জানতে চাই, বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রয়োজন কী, বিসিবি কীভাবে আরও সহায়তা করতে পারে, এবং আমরা সবাই মিলে কীভাবে দেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে পারি।”
আগামী ৯ ও ১০ নভেম্বর ঢাকায় আয়োজিত এই কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্রিকেট সংগঠক, কোচ, ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও বোঝাপড়া বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, “দিনশেষে আমরা সবাই বাংলাদেশের ক্রিকেটের অংশীদার। এই কনফারেন্সের মাধ্যমে আমরা একে অপরকে জানব, সম্পর্ক তৈরি করব, এবং এখান থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের নতুন যাত্রা শুরু হবে।”
বুলবুল আরও জানান, বাংলাদেশের ক্রিকেটে বর্তমানে অনেক সংগঠক ও কর্মকর্তারা বিচ্ছিন্নভাবে কাজ করছেন। তাদেরকে একত্রিত করার মধ্য দিয়েই বিসিবির লক্ষ্য ও দিকনির্দেশনা স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভিশন ও মিশন সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করতে পারলে আমরা সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারব। এভাবেই আমরা দেশের ক্রিকেটের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পারব।”
বিসিবি সভাপতি আরও বলেন, দেশের ক্রিকেট কাঠামোকে আরও দৃঢ় করতে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কার্যক্রম জানা এবং সেই অনুযায়ী সহায়তা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি। “বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভিশন বুঝতে হলে আগে জানতে হবে, জেলার ও উপজেলার স্তরে কীভাবে ক্রিকেট পরিচালিত হচ্ছে। কোথায় ঘাটতি আছে, কোথায় শক্তি আছে—তা চিহ্নিত করেই বিসিবি সঠিকভাবে সহায়তা দিতে পারবে,” যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের এই উদ্যোগের মাধ্যমে মূলত জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ক্রিকেটের প্রচার, প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামো উন্নয়নের গতি আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই কনফারেন্সের আলোচনাগুলো ভবিষ্যতে জাতীয় ক্রিকেট উন্নয়ন নীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিসিবি সূত্র জানিয়েছে।
আগামী নভেম্বরের এই আয়োজনকে কেন্দ্র করে বিসিবি ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে। দেশের ৬৪ জেলার ক্রিকেট সংগঠক, ক্রীড়া কর্মকর্তা, কোচ, নারী ক্রিকেট সংগঠক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের এতে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে কেন্দ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের যোগাযোগ জোরদার হলে দেশের ক্রিকেট কাঠামো আরও সুসংগঠিত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।


