রাজনীতি ডেস্ক
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেছেন, ষড়যন্ত্র ও দমননীতির মুখেও বিগত ১৬ বছরে বিএনপির অস্তিত্ব বিপন্ন করা যায়নি। দলের প্রতি জনগণের আস্থা ও সমর্থনই বিএনপিকে টিকিয়ে রেখেছে।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খায়রুল কবির খোকন বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে নানা চক্রান্ত, মামলা, হামলা ও নির্যাতনের মাধ্যমে বিএনপিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু তা ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি বারবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। জনগণের মাঝে বিএনপির অস্তিত্ব অটুট রয়েছে।”
তিনি বলেন, “জিয়াউর রহমান ছিলেন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অনন্য নেতা, যিনি দুইটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি যুদ্ধ করেছেন এবং স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সূচনা করেন। পরে রাষ্ট্রপতি হিসেবে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।”
খোকন বলেন, “জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর অনেকে ভেবেছিল বিএনপি টিকবে না। কিন্তু তার প্রতি জনগণের ভালোবাসা প্রমাণ করে বিএনপি কোনো ব্যক্তিনির্ভর সংগঠন নয়, এটি একটি জনভিত্তিক রাজনৈতিক দল। তার জানাজায় লাখো মানুষের উপস্থিতিই তা প্রমাণ করেছিল।”
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে জিয়াউর রহমানকে পাকিস্তানের চর হিসেবে অপপ্রচার করা হয়েছে, অথচ দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি তৈরিতে তিনিই প্রথম দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। তিনি প্রবাসী আয় ও গার্মেন্টস শিল্পকে দেশের অর্থনীতির প্রধান স্তম্ভে পরিণত করার উদ্যোগ নেন, যা আজ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতার ভিত্তি।”
খোকন বলেন, “বর্তমান সরকার দেশে একদলীয় শাসন কায়েমের চেষ্টা চালাচ্ছে। অতীতে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালের সময়ও দলীয় সরকার গঠনের ফলে দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতেও সেই আশঙ্কা দেখা যাচ্ছে।”
তিনি দলের অভ্যন্তরীণ অবস্থা প্রসঙ্গে বলেন, “জুলাই পরবর্তী সময়ে দলের ঐক্যে কিছুটা বিভাজন দেখা গেছে। তবে আমরা আশাবাদী, এই বিভক্তি দূর হয়ে আবার ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হবে। কারণ জনগণ শেষ পর্যন্ত একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায়।”
আলোচনা সভায় সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন কবির বেপারী, সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরীসহ অন্যান্য বক্তারাও উপস্থিত ছিলেন। তারা বলেন, দেশের গণতন্ত্র ও সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক বহুত্ববাদ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
সভায় বক্তারা জাতির রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনে সংলাপ ও সমঝোতার আহ্বান জানান। তারা বলেন, দেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় প্রত্যাবর্তন অপরিহার্য।


