খেলাধুলা ডেস্ক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ ক্লাবগুলোর একের পর এক ফিফার নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ছে। গত সপ্তাহে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারির পর এবার একই শাস্তি পেয়েছে ঢাকা আবাহনী লিমিটেড। এছাড়া বসুন্ধরা কিংসের ওপরও রয়েছে পাঁচটি পৃথক নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত।
৩ নভেম্বর ফিফা ঢাকা আবাহনীর খেলোয়াড় নিবন্ধনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সাধারণত বিদেশি ফুটবলার ও কোচদের চুক্তিবদ্ধ অর্থ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ফিফা সংশ্লিষ্ট ক্লাবের বিরুদ্ধে এই ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কোনো ক্লাব বকেয়া পরিশোধ না করা পর্যন্ত অথবা আবেদনকারী খেলোয়াড় বা কোচ অভিযোগ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকে।
২০২৪-২৫ ফুটবল মৌসুমে আবাহনী একাধিক প্রশাসনিক ও ক্রীড়াজনিত সংকটের মধ্য দিয়ে সময় পার করেছে। ক্লাবটি মৌসুম শুরুর আগে কয়েকজন বিদেশি ফুটবলার ও কোচের সঙ্গে চুক্তি সম্পন্ন করলেও ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সেসব চুক্তি বাতিল করে। পরবর্তীতে দেশি কোচ মারুফুল হকের অধীনে দল গঠন করে প্রথম লেগে বিদেশি ফুটবলার ছাড়াই খেলেছে। ফুটবল সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, ওই চুক্তিবদ্ধ বিদেশিদের কেউ হয়তো বকেয়া প্রাপ্যের দাবিতে ফিফায় আবেদন করেছেন। তবে ক্লাব কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য জানানো হয়নি।
চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই ঘরোয়া ফুটবলে ফিফার নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনা চলছে। মৌসুম শুরুর আগে ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্স ক্লাবের খেলায়ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। উজবেক ফুটবলারের পাওনা পরিশোধ করার পর ফিফা তাদের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে, ফলে দলটি লিগে অংশ নিতে পারে।
এর অল্প সময় পরই লিগের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসের ওপর ফিফা দলবদলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। রোমানিয়ান কোচ ভ্যালেরি তিতে ও একাধিক বিদেশি খেলোয়াড়ের পাওনা সংক্রান্ত পৃথক আবেদনের ভিত্তিতে বর্তমানে কিংসের ওপর মোট পাঁচটি নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে।
এছাড়া ইরানি ফুটবলার মাইসেমের বকেয়া পরিশোধ না করায় ২৯ অক্টোবর মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ওপরও ফিফা দলবদল নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ফলে এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোহামেডান ও আবাহনী—দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাবই ফিফার শাস্তির আওতায় এসেছে।
বর্তমানে ফিফার রেজিস্ট্রেশন ব্যানের তালিকায় বাংলাদেশের মোট ১১টি ফাইল রয়েছে। এর মধ্যে বসুন্ধরা কিংসের পাঁচটি, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের তিনটি এবং মোহামেডান, আবাহনী ও ফেনী সকার ক্লাবের একটি করে ফাইল অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
যদিও চলতি প্রিমিয়ার লিগ মৌসুমে দলবদল পর্ব ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে, তবুও সংশ্লিষ্ট ক্লাবগুলো দুই লেগের মাঝামাঝি সময়ে মধ্যবর্তী দলবদলে অংশ নিতে চাইলে ফিফার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে ঘরোয়া ফুটবলের একাধিক শীর্ষ ক্লাব এখন আন্তর্জাতিক সংস্থার আর্থিক অনিয়ম সংক্রান্ত তদন্ত ও দায় পরিশোধের চাপের মুখে পড়েছে।


