সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা সেনাবাহিনীর

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা সেনাবাহিনীর

জাতীয় ডেস্ক: দেশের জনগণের মতো সেনাবাহিনীও সরকারের ঘোষিত রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায় বলে জানিয়েছেন আর্মি সদর দপ্তরের ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডের (আর্টডক) জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মাইনুর রহমান। তিনি বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও সুদৃঢ় হবে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) সেনাসদরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান বলেন, “দেশের জনগণের মতো আমরাও চাই সরকারের রূপরেখা অনুযায়ী একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। রূপরেখার মধ্যে সময়সীমাও নির্ধারিত রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশের স্থিতিশীলতা আরও জোরদার হবে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে এবং সেনাবাহিনী তখন সেনানিবাসে ফিরে যেতে পারবে। আমরা সেই সময়টির অপেক্ষায় আছি।”

তিনি জানান, সরকার এখন পর্যন্ত নির্বাচনের যে রূপরেখা প্রণয়ন করেছে, তার ভিত্তিতে সেনাবাহিনী প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সীমিত পরিসরে চললেও নির্বাচনের সময়কার দায়িত্বকে সামনে রেখে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

আরও বলেন, “আমরা সবসময় প্রস্তুত থাকার নীতি অনুসরণ করি। শান্তিকালীন সময়ে সেনাবাহিনীর মূল দায়িত্ব হলো যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ। আমরা বলি—‘উই ট্রেইন এজ উই ফাইট’। তাই প্রশিক্ষণকে আমরা আমাদের পেশাগত প্রস্তুতির কেন্দ্রবিন্দুতে রাখি।”

গত ১৫ মাস ধরে সেনাবাহিনী মাঠে থেকে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “এ সময়ে আমরা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে দায়িত্ব পালন করেছি। নির্বাচন পর্যন্ত বা তার কিছুটা পর পর্যন্ত আমাদের বাইরে থাকতে হতে পারে, যা প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে কিছুটা প্রভাব ফেলছে।”

তিনি আরও বলেন, “গত ১৫ মাস যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনী দায়িত্ব পালন করেছে, তা সহজ ছিল না। এমন পরিস্থিতি বাংলাদেশ প্রতিদিনের বাস্তবতায় খুব বেশি দেখেনি। তবে সেনাবাহিনী পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে এবং তা অব্যাহত রাখবে।”

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমান আশা প্রকাশ করে বলেন, “আমরা চাই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। নির্বাচনের পর সেনাবাহিনী স্বাভাবিক প্রশিক্ষণ ও দায়িত্ব পালনের পরিবেশে ফিরে আসতে পারবে।”

প্রসঙ্গত, গত ১৫ মাস ধরে সেনাবাহিনী মাঠপর্যায়ে প্রশাসনিক সহায়তায় নিয়োজিত রয়েছে। নির্বাচনকালীন সময়ে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রায় ৯৪ হাজার সদস্য মাঠে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা জোরদারে ৪৮ হাজার পুলিশ সদস্যকেও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মাইনুর রহমানের বক্তব্যে স্পষ্ট করা হয়, সেনাবাহিনী দেশের সংবিধান ও সরকারের নির্দেশনার আলোকে নির্বাচনকালীন সময়ে দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ প্রস্তুত এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের স্থিতিশীলতা ও স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা রাখে।

জাতীয়