খেলাধুলা ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় অনুষ্ঠিতব্য ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ২২টি অংশগ্রহণকারী দেশের নতুন জার্সি উন্মোচন করেছে বিশ্বখ্যাত ক্রীড়া সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস। ফুটবলের সর্ববৃহৎ এই আসরে ৪৮টি দেশ অংশ নেবে, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৮টি দল সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
অ্যাডিডাস জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ জাতীয় ফুটবল ফেডারেশনগুলোর জন্য নতুন হোম কিট উন্মোচন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনা, জার্মানি, জাপানসহ বিশ্বকাপের জন্য ইতোমধ্যে যোগ্যতা পাওয়া একাধিক দেশ। প্রতিটি জার্সির নকশায় সংশ্লিষ্ট দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আধুনিক ডিজাইন ভাষার সমন্বয় ঘটানো হয়েছে।
আর্জেন্টিনার ঐতিহ্যবাহী আকাশি-সাদা ডোরাকাটা জার্সি এবার আরও হালকা রঙে এবং সূক্ষ্ম নকশায় তৈরি করা হয়েছে, যা দেশের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পরিচয়ের প্রতিফলন বহন করে। অন্যদিকে জার্মানির জার্সিতে ব্যবহৃত হয়েছে নতুন জ্যামিতিক নকশা, যা ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপের জার্সির নান্দনিকতা থেকে অনুপ্রাণিত। জাপানের জার্সিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সূর্যোদয়ের রঙ এবং ঐতিহ্যবাহী জাপানি শিল্পের ছোঁয়া।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, নতুন এই জার্সিগুলোর ডিজাইনে শুধু শৈল্পিক উপাদান নয়, বরং আধুনিক প্রযুক্তিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। খেলোয়াড়দের আরাম নিশ্চিত করতে এতে ব্যবহার করা হয়েছে সর্বশেষ Climacool+ প্রযুক্তি, যা বিভিন্ন আবহাওয়ায় শরীরের বায়ু চলাচল স্বাভাবিক রাখবে। ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের আয়োজক তিন দেশ—যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মেক্সিকোর ভিন্ন ভিন্ন আবহাওয়া বিবেচনায় নিয়েই এই প্রযুক্তি সংযোজন করা হয়েছে।
জার্সিগুলোর প্রতিটিতে রয়েছে সূক্ষ্ম বিবরণ ও লুকানো প্রতীক, যেমন লেন্টিকুলার ক্রেস্ট ও ভেতরের অংশে খোদাই করা লেখা, যা দেশগুলোর জাতীয় পরিচয়কে ভিজ্যুয়াল রূপে প্রকাশ করছে। অ্যাডিডাস বলেছে, এই সূক্ষ্ম উপাদানগুলো খেলোয়াড় ও সমর্থকদের জন্য জার্সিটিকে কেবল পোশাক নয়, বরং গর্ব ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করবে।
অ্যাডিডাসের ফুটবল বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার স্যাম হ্যান্ডি বলেন, “জাতীয় দলের জার্সি শুধুই ক্রীড়াপোশাক নয়; এটি একটি দেশের পরিচয় ও গর্বের প্রতীক। এই ডিজাইনগুলো প্রতিটি দেশের শিকড়কে সম্মান জানায় এবং এমন এক নতুন যুগের সূচনা করে, যেখানে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের ভক্ত একই গল্পের অংশ হয়ে ওঠেন।”
বিশ্বকাপ ফুটবলকে বিবেচনা করা হয় বিশ্বের প্রায় সব মহাদেশের এক পুনর্মিলনী হিসেবে। অ্যাডিডাস জানায়, তাদের নতুন কালেকশন সেই বৈশ্বিক চেতনা ও বৈচিত্র্যকে একসূত্রে বেঁধেছে। ডিজাইনগুলোতে ফুটবলের বিবর্তন, অতীতের স্মৃতি ও ভবিষ্যতের উদ্ভাবনের সেতুবন্ধন ঘটানো হয়েছে।
২০২৬ সালের বিশ্বকাপ হবে ইতিহাসের প্রথম আসর, যেখানে ৪৮টি দল অংশ নেবে। টুর্নামেন্টটি আগামী ১১ জুন থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত চলবে। এখন পর্যন্ত ফিফা বাছাইপর্বের খেলা শেষ হয়নি, ফলে মূল পর্বের ড্র আগামী ৫ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত হবে।
অ্যাডিডাস জানিয়েছে, উন্মোচিত ২২ দেশের এই জার্সিগুলো ৬ নভেম্বর থেকে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। বাকি দেশগুলোর জার্সি বাছাইপর্ব শেষ হওয়ার পর ধাপে ধাপে প্রকাশ করা হবে।


