শাহজালাল বিমানবন্দরে কার্গো কমপ্লেক্স থেকে মোবাইল চুরি করতে গিয়ে আনসার সদস্য আটক

শাহজালাল বিমানবন্দরে কার্গো কমপ্লেক্স থেকে মোবাইল চুরি করতে গিয়ে আনসার সদস্য আটক

জাতীয় ডেস্ক

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্স থেকে মোবাইল ফোন চুরি করে বের হওয়ার সময় জেনারুল ইসলাম নামে এক আনসার সদস্যকে আটক করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিরাপত্তা কর্মীরা। বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটে এ ঘটনা ঘটে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিরাপত্তা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, আটক জেনারুল আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন। বিকেলে ডিউটি শেষে হ্যাঙ্গার গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় তার চলাফেরায় অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করেন নিরাপত্তা কর্মীরা। সন্দেহজনক আচরণের কারণে তাকে তল্লাশি করা হলে তার পরিহিত বুটজুতা, প্যান্ট ও শার্টের ভেতরে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় অন্তত ১৫টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, আটক আনসার সদস্যের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, চুরি করা মোবাইল ফোনগুলো কার্গো থেকে বাইরে পাচারের উদ্দেশ্যে তিনি বের করার চেষ্টা করছিলেন।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, “তল্লাশির সময় দেখা যায়, তিনি একাধিক মোবাইল ফোন জুতার ভেতরে এবং কাপড়ের বিভিন্ন অংশে লুকিয়ে রেখেছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, বাইরে তার সহযোগীরা অপেক্ষা করছিলেন। সুযোগ পেলে তিনি মোবাইলগুলো তাদের হাতে তুলে দিতেন।”

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই আনসার সদস্য জেনারুলকে আটক করে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের নিরাপত্তা বিভাগ পৃথকভাবে তদন্ত শুরু করেছে।

এদিকে, বিমানবন্দর এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত আনসার সদস্যের জড়িত থাকার ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা প্রটোকল পুনর্মূল্যায়ন করা হবে।

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে পূর্বেও পণ্যচুরির কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক পণ্য আমদানির কারণে ওই এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হলেও সময় সময় অভ্যন্তরীণ কর্মীদের সম্পৃক্ততা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়।

বিমানবন্দর পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, “আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে চুরি ও পণ্য পাচারচেষ্টার অভিযোগে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি সংঘবদ্ধ চক্রের অংশ হতে পারে।”

বিমানবন্দরে পণ্য পরিবহন ও সংরক্ষণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে বাড়তি নজরদারি এবং সিসিটিভি পর্যবেক্ষণ জোরদারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সংশ্লিষ্ট বিভাগ জানিয়েছে।

ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার পর বিমানবন্দরের আনসার ইউনিট থেকেও অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলেছে, দায়ী সদস্য দোষী প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ