খেলাধুলা ডেস্ক
বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের সদস্য জাহানারা আলমের আনা যৌন হয়রানির অভিযোগ যাচাই করতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিসিবির গঠিত এ তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি তারিক উল হাকিম। সদস্য হিসেবে রয়েছেন বিসিবির পরিচালক রুবাবা দৌলা এবং বাংলাদেশ নারী ক্রীড়া সমিতির সভাপতি ও সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার সারওয়াত সিরাজ শুক্লা।
জাহানারা আলম সম্প্রতি জাতীয় নারী দলের সাবেক নির্বাচক ও টিম ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু এবং প্রয়াত সাবেক ইনচার্জ তৌহিদ মাহমুদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন। তিনি দাবি করেন, বিষয়টি বিসিবিকে জানানো হলেও দীর্ঘদিন কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে ক্রিকেট মহলে। জাহানারার অভিযোগের পর আরও কয়েকজন নারী ক্রিকেটারও নানা ধরনের অনিয়ম ও পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তোলেন। তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে নারী ক্রিকেট দলে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব, গ্রুপিং ও প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা চলছে, যা দলের পারফরম্যান্স ও খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
এ পরিস্থিতিতে বিসিবি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়। বোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নারী ক্রিকেটে সুশাসন ও নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে তদন্ত প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালিত হবে। কমিটি প্রত্যেক পক্ষের বক্তব্য শুনে যাচাই-বাছাই শেষে প্রতিবেদন দাখিল করবে।
বিসিবির কর্মকর্তারা আরও জানিয়েছেন, কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বোর্ড প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ও শৃঙ্খলাবিষয়ক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। একই সঙ্গে নারী ক্রিকেটে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে দীর্ঘমেয়াদি নীতিমালা ও প্রশিক্ষণ কাঠামো প্রণয়নের বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হতে পারে।
উল্লেখ্য, জাহানারা আলম বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তিনি জাতীয় দলের হয়ে বহু আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেছেন এবং একসময় দলের অধিনায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তার আনা এই অভিযোগ শুধু নারী ক্রিকেট নয়, দেশের ক্রীড়া প্রশাসনে নারী নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা ব্যবস্থার প্রশ্নকেও সামনে নিয়ে এসেছে।
ক্রীড়া বিশ্লেষকদের মতে, এই তদন্তের ফলাফল নারী ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ প্রশাসনিক কাঠামো ও খেলোয়াড়দের আস্থার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে বিসিবি পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।


