আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান অনশন ভাঙলেন সালাহউদ্দিন আহমেদের আশ্বাসে

আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান অনশন ভাঙলেন সালাহউদ্দিন আহমেদের আশ্বাসে

রাজনীতি ডেস্ক

আমজনতার দলের সদস্য সচিব তারেক রহমান স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের আশ্বাসে রোববার (৯ নভেম্বর) রাতে অনশন কর্মসূচি শেষ করেছেন। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) দলটির নিবন্ধন বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবিতে তিনি টানা ছয় দিন ধরে অনশন করছিলেন।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের মূল ফটকের সামনে সালাহউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত হয়ে তারেক রহমানকে অনশন ভাঙানোর আহ্বান জানান। তিনি তারেক রহমানকে আশ্বস্ত করেন যে সোমবার (১০ নভেম্বর) ইসি-র সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে আপিল আবেদন করা হবে এবং দলীয় কিছু সাংগঠনিক অফিসে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনা হবে। এর পর তারেক রহমান অনশন ভাঙেন।

অনশন ভাঙার পর সহকর্মীরা তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নির্বাচন ভবনের সামনে থেকে নিয়ে যান। দীর্ঘ অনশনে অংশ নেওয়ার ফলে তারেক রহমানের শারীরিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছিল এবং গত দুই দিনে তাকে স্যালাইন নিতে হয়েছিল বলে জানা গেছে।

গত মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) বিকেল থেকে তারেক রহমান আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন। তিনি অভিযোগ করেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ‘আমজনতার দল’ নিবন্ধনের সকল শর্ত পূরণ করলেও নির্বাচন কমিশনের চূড়ান্ত তালিকায় তাদের দলের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এর প্রতিবাদেই তিনি অনশন শুরু করেন।

তারেক রহমানের দাবি, দলটির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ে কার্যক্রম, অফিস ও প্রয়োজনীয় কাঠামো থাকা সত্ত্বেও তদন্তে কার্যক্রম না থাকার অজুহাতে নিবন্ধন না দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নিবন্ধন না পাওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।

অনশন চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা তার অনশনস্থলে গিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারাও একাধিকবার সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে আলোচনা করেন। তবে নিবন্ধন সংক্রান্ত সিদ্ধান্তে পরিবর্তনের কোনো ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তিনি অবস্থান থেকে সরেননি।

ইসি সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন সংক্রান্ত আপিল আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া আগামী সপ্তাহে শুরু হতে পারে। আপিল দায়েরের পর আবেদনগুলোর শুনানি শেষে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নতুন দলগুলোর নিবন্ধন প্রশ্নটি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে যদি ‘আমজনতার দল’ নিবন্ধন পায়, তবে এটি রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বাস্তবতা তৈরি করতে পারে। তবে নিবন্ধন না পেলে দলটির ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কার্যক্রম প্রভাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনের সামনে গত কয়েকদিন ধরে নিরাপত্তা জোরদার ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অনশনস্থলে নিয়মিত টহল দিচ্ছিলেন, যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।

সোমবার আপিল আবেদনের পর নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া প্রত্যাশা করা হচ্ছে। ‘আমজনতার দল’ নিবন্ধন পাবে কি না, তা নির্ভর করবে কমিশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ওপর।

রাজনীতি