চীনা নারীর বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে ১১ বছর ৮ মাসের কারাদণ্ড

চীনা নারীর বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে ১১ বছর ৮ মাসের কারাদণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

যুক্তরাজ্যের একটি আদালত চীনা নাগরিক ঝিমিন কিয়ানকে, যিনি ‘ইয়াদি ঝ্যাং’ নামেও পরিচিত, অর্থপাচার ও বিনিয়োগ প্রতারণার মাধ্যমে অর্জিত অর্থকে বিটকয়েনে রূপান্তরের অভিযোগে ১১ বছর ৮ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে। ৪৭ বছর বয়সী কিয়ানের বিরুদ্ধে রায় মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সাউথওয়ার্ক ক্রাউন কোর্টে ঘোষণা করা হয়। এই মামলায় যুক্তরাজ্য পুলিশ ৬১,০০০ বিটকয়েন জব্দ করেছে, যা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি জব্দের ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

আদালতে অভিযোগের ভিত্তিতে বলা হয়েছে, কিয়ান ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে চীনে বিনিয়োগ প্রতারণার মাধ্যমে ১ লাখ ২৮ হাজার মানুষকে ঠকিয়ে প্রায় ৬৩০ কোটি মার্কিন ডলার আয় করেন। ওই অর্থের একটি অংশ তিনি বিটকয়েন এবং বিলাসবহুল সম্পত্তিতে রূপান্তর করে পাচার করেছিলেন। ২০১৭ সালে চীন থেকে পালিয়ে কিয়ান যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশে সাত বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন। তবে চীনা পুলিশ পরে প্রতারণার বড় অংশ উদ্ধার করেছিল। কিয়ান ওই অর্থের কিছু অংশ নিজের কাছে রেখে ৭০,০০০ বিটকয়েনে রূপান্তর করে একটি ল্যাপটপে সংরক্ষণ করেন।

২০১৮ সালে লন্ডনে তিনটি বিলাসবহুল সম্পত্তি কেনার সময় কিয়ান ধরা পড়েন। ব্যাংকের ‘নো-ইওর-কাস্টমার’ (কেওয়াইসি) যাচাইয়ের মাধ্যমে তার পরিচয় নিশ্চিত হয়। এরপর ২০২০ সালে কিয়ান পুনরায় পালিয়ে যান, তবে পুলিশ তার লকার থেকে চীন থেকে আনা ল্যাপটপসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ উদ্ধার করে। ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে যুক্তরাজ্যে আত্মগোপনে থাকা কিয়ান ও তার সহযোগী, মালয়েশীয় নাগরিক সেনঘক লিংকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে ৬২ মিলিয়ন পাউন্ড মূল্যের ক্রিপ্টোকারেন্সি, বিপুল নগদ অর্থ এবং দুটি জাল পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়।

সেনঘক লিংকে পৃথকভাবে ৪ বছর ১১ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।

মেট্রোপলিটন পুলিশের অর্থনৈতিক ও সাইবার অপরাধ ইউনিটের প্রধান উইল লাইন বলেন, এটি যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে মূল্যমানের দিক থেকে সবচেয়ে বড় মানি লন্ডারিং মামলা এবং সবচেয়ে বড় ক্রিপ্টোকারেন্সি জব্দের ঘটনা।

যুক্তরাজ্য ও ওয়েলসের অ্যাটর্নি জেনারেল রিচার্ড হারমার বলেন, কেবল নিজেদের বিলাসিতার জন্য এই দুই প্রতারক হাজার হাজার মানুষের জীবন নষ্ট করেছে।

আন্তর্জাতিক