জাতীয় ডেস্ক
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সাবেক সদস্যদের জন্য আমদানি করা ৩১টি বিলাসবহুল গাড়ি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এনবিআর বুধবার (১২ নভেম্বর) একটি বিশেষ আদেশ জারি করেছে।
এনবিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই গাড়িগুলো বিশেষ শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা হয়েছিল। তবে, সুবিধাটি সংসদ বিলুপ্ত হওয়ায় প্রযোজ্য হবে কি না তা জানতে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস এনবিআরের কাছে নির্দেশনা চায়। পরবর্তী পর্যায়ে ২০২৪ সালের ৮ ডিসেম্বর এনবিআর জানায়, এসব গাড়িতে শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রযোজ্য নয় এবং আমদানিকারকদের স্বাভাবিক হারে শুল্ক-কর পরিশোধ করে গাড়িগুলো খালাস করতে হবে। সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকরা শুল্ক-কর পরিশোধ না করায় কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর ধারা ৯৪(৩) অনুযায়ী গাড়িগুলো নিলামে তোলা হয়। নিলামে কোন ক্রেতা গাড়িগুলোর যৌক্তিক মূল্য প্রস্তাব না করায় বিক্রি সম্ভব হয়নি।
এরপর আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনস্বার্থে এসব গাড়ি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অধীনে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তরে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি করা এই ৩১টি গাড়ির মোট শুল্ক ও করের পরিমাণ ২৬৯ কোটি ৬১ লাখ ৮৯ হাজার ৬০০ টাকা। একক গাড়ির সর্বোচ্চ শুল্ক-কর ৯ কোটি ৪৪ লাখ ৮৩ হাজার ৩০০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৮ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৪০০ টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভবিষ্যতে যদি সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকরা আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য শুল্ক-কর পরিশোধ করেন, তবে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস শুল্কায়ন সম্পন্ন করে গাড়িগুলো তাদের খালাস দিতে পারবে। সেই ক্ষেত্রে সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট গাড়িগুলো কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে ফেরত দেবে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস সূত্রে জানা যায়, বিলুপ্ত সংসদের কিছু সাবেক সংসদ সদস্য বিশেষ শুল্কমুক্ত কোটা ব্যবহার করে বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি করেছিলেন। সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর শুল্কমুক্ত সুবিধা কার্যকর না থাকায় এসব গাড়ি দীর্ঘদিন বন্দর এলাকায় খালাসহীন অবস্থায় পড়ে ছিল।
এর আগে সেপ্টেম্বরে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান এক অনুষ্ঠানে জানান, দ্বাদশ সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করা ৩০টি গাড়ি সরকারকে হস্তান্তর করা হচ্ছে। নিলামে ভালো দর না পাওয়ায় এসব গাড়ি সরকারকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০২৪ সালে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর এসব গাড়ি বন্দর এলাকায় দীর্ঘদিন অবস্থান করেছিল। হস্তান্তরের মাধ্যমে এগুলো এখন সরকারি ব্যবস্থাপনায় ব্যবহারযোগ্য হবে, যা ভবিষ্যতে সরকারি কর্মকাণ্ডে ব্যবহারিক সুবিধা প্রদান করবে।


