আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি অভিযোগ করেছেন, চলতি সপ্তাহে রাজধানী ইসলামাবাদসহ দুটি স্থানে আত্মঘাতী বোমা হামলায় আফগানিস্তানের নাগরিকরা জড়িত। বৃহস্পতিবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত পার্লামেন্টে দেওয়া ভাষণে এই অভিযোগ করেন তিনি।
মোহসিন নাকভি জানান, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী দু’টি আত্মঘাতী হামলাকারীর পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তিনি বলেন, “তারা দু’জনই আফগান নাগরিক।” তবে পাকিস্তানের এই অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোন প্রতিক্রিয়া জানায়নি আফগানিস্তান।
মন্ত্রীর ভাষ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার ইসলামাবাদের একটি নিম্ন আদালতের বাইরে পুলিশের টহল দলের কাছে এক আত্মঘাতী হামলাকারী বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিজেকে উড়িয়ে দেন। এতে ১২ জন নিহত এবং ২৭ জন আহত হন। হামলার পর, পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগের দিন, সোমবার, আফগান সীমান্তের কাছে দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান জেলায় এক হামলাকারী বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি নিয়ে পাকিস্তানি সামরিক বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আঘাত হানেন। ওই হামলায় তিনজন নিহত হন। এরপর হামলাকারীরা বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে এবং সেখানে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। ২৪ ঘণ্টা ধরে চলা এই সংঘর্ষের পর সব হামলাকারী নিহত হন।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে গত কয়েক বছরে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। ইসলামাবাদ অভিযোগ করে বলছে, আফগান সীমান্তে অবস্থানকারী জঙ্গি গোষ্ঠী পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে, তবে কাবুল এই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, তারা পাকিস্তানে হামলার জন্য কোনো জঙ্গিকে আশ্রয় দেয় না।
গত মাসে দুই দেশের সীমান্তে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন সৈন্য ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ৭ নভেম্বর, ইস্তাম্বুলে কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় পাকিস্তান-আফগানিস্তান শান্তি আলোচনা শুরু হলেও সেটি শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায়।
চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে, তুরস্কের পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং গোয়েন্দা প্রধান পাকিস্তান সফরে আসার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তারা পাকিস্তান-আফগানিস্তান স্থগিত শান্তি আলোচনা পুনরায় চালুর জন্য বৈঠক করতে আসার কথা ছিল।
এদিকে, পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে আফগানিস্তানের প্রতি নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করার দাবি জানানো হয়েছে, বিশেষ করে সীমান্তের ওপার থেকে হামলা প্রতিরোধের জন্য।


