আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইসরায়েলি আগ্রাসনে গত দুই বছরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ২ লাখ ৮২ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ। এই ধ্বংসযজ্ঞের ফলে লাখো ফিলিস্তিনি শীতের আগেই তাঁবুতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। একইসাথে, ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার কারণে যুদ্ধবিরতি কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে, বলছে সংস্থাটি।
বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানায়, ইউএনআরডব্লিউএ তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বিবৃতিতে এসব তথ্য প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, শেল্টার ক্লাস্টার নামে একটি মানবিক প্ল্যাটফর্ম থেকে এ হিসাব পাওয়া গেছে, যা ইউএনআরডব্লিউএ এবং আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট ফেডারেশন যৌথভাবে পরিচালনা করছে।
ইউএনআরডব্লিউএ আরও জানায়, শীত আসার আগে থেকেই গাজার লাখ লাখ ফিলিস্তিনি পরিবার তাঁবুতে বাস করছেন। তাঁবুতে থাকা এসব মানুষ অত্যন্ত সংকীর্ণ জায়গায় গাদাগাদি করে অবস্থান করছেন, যার ফলে তারা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার পাশাপাশি মৌলিক চাহিদা মেটাতেও সংগ্রাম করছেন। এই পরিস্থিতি তাদের জীবনযাপনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলেছে।
গাজা উপত্যকায় ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে চলমান সংঘাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, ইসরায়েল নিয়মিতভাবে এই সমঝোতা লঙ্ঘন করছে। প্রতিদিনই হামাসের অবস্থান লক্ষ্য করে ইসরায়েলের বিমান হামলা অব্যাহত থাকছে, ফলে গাজার অভ্যন্তরে খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী প্রবেশে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে।
এ পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ৬৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন আরও ১ লাখ ৭০ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি। লাগাতার এই ধ্বংসযজ্ঞের কারণে গাজা এখন বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে।
এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি সহায়তা এবং মানবিক সাহায্যের তীব্র প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউএনআরডব্লিউএ, যা বর্তমানে ফিলিস্তিনিদের জীবনের মৌলিক চাহিদা পূরণের জন্য একমাত্র ভরসা।


