অর্থনীতি ডেস্ক
গত সপ্তাহে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বড় ধরনের দরপতন দেখা গেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে মাত্র ১৭টির, যেখানে ৩৬৩টির দর কমেছে। এক্সচেঞ্জের সবগুলো মূল্যসূচক প্রায় ৫ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশ পর্যন্ত পতন করেছে। পাশাপাশি, এক্সচেঞ্জের দৈনিক গড় লেনদেন প্রায় ২৭ শতাংশ কমে ৩৫৪ কোটি ৩৫ লাখ ৪০ হাজার টাকায় নেমেছে। বাজার মূলধনও সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা কমে ৬ লাখ ৭৩ হাজার ৯৭৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পতনের পেছনে কয়েকটি নেতিবাচক কারণ কাজ করেছে। এর মধ্যে পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারের দাম শূন্য ঘোষণা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নতুন মার্জিন ঋণ বিধান এবং নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলের অনলাইনে ঘোষিত ‘লকডাউন’ উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে মার্জিন ঋণ সংক্রান্ত নতুন বিধান ও লকডাউন বাজারে বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি কমিয়ে দিয়ে শেয়ার বিক্রির প্রবণতা বৃদ্ধি করেছে।
ডিএসইতে গত সপ্তাহে মোট ৩৮৩টি কোম্পানি, মিউচুয়াল ফান্ড ও করপোরেট বন্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৭টির দর বেড়েছে, ৩৬৩টির কমেছে, ৩টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে এবং ৩০টির লেনদেন হয়নি। দরবৃদ্ধির চেয়ে ২১ গুণ বেশি সিকিউরিটিজের দরপতনের কারণে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৬৫ পয়েন্ট বা ৫.৩৪ শতাংশ কমে ৪ হাজার ৭০৩ পয়েন্টে নেমেছে। নির্বাচিত কোম্পানির সূচক ডিএস-৩০ ৮৯ পয়েন্ট বা ৪.৬০ শতাংশ কমে ১ হাজার ৮৫১ পয়েন্টে এবং শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস ৬২ পয়েন্ট বা ৫.৯৯ শতাংশ কমে ৯৭৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ব্রোকারেজ হাউস ইবিএল সিকিউরিটিজের তথ্য অনুযায়ী, সূচকের পতনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে ইসলামী ব্যাংক, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, রেনাটা পিএলসি এবং ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার।
খাতভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪.১৪ শতাংশ প্রকৌশল খাতে, ১৩.৩৪ শতাংশ ওষুধ ও রসায়ন খাতে, ৯.৯৯ শতাংশ বস্ত্র খাতে, ৮.৭৩ শতাংশ ব্যাংক খাতে এবং ৮.৩৩ শতাংশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে হয়েছে। সব খাতের শেয়ারে নেতিবাচক রিটার্ন এসেছে। বিশেষ করে জীবন বীমা খাতে ১৮.৪ শতাংশ, কাগজ ও মুদ্রণ খাতে ১৭ শতাংশ, পাট খাতে ১৫.৩ শতাংশ, মিউচুয়াল ফান্ডে ১২.৮৭ শতাংশ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ১১.৪২ শতাংশ নেতিবাচক রিটার্ন হয়েছে।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই গত সপ্তাহে ৩.৯৯ শতাংশ কমে ১৩ হাজার ৪০১ পয়েন্টে, আর সিএসসিএক্স সূচক ৩.৪৪ শতাংশ কমে ৮ হাজার ৩১৯ পয়েন্টে নেমেছে। সিএসইতে ২৭২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৯টির, কমেছে ২৩৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৭টির। আলোচ্য সপ্তাহে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, যা আগের সপ্তাহের ৯৭ কোটি ২০ লাখ টাকার তুলনায় কম।


